ঢাকা: স্কুল জীবনেই উদ্যোক্তা সাহার মতিনের এগিয়ে চলা
স্বপ্ন মানুষকে বড় করে। আর বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়ণের সড়কে। তরুণদের হাত ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতি । ইঞ্জিনিয়ার রুহুল মতিনের পরিবার এদেশের একপি অন্যতম বিশিষ্ট পরিবার। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন সহযোগি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি স্বর্ণপদক প্রদান করে সম্মাননা প্রদান করেন।
তার সন্তান মো. খালেদ হাসান মতিন। যিনি টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আরএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। খালেদ হাসান মতিনের কন্যা সাহার মতিন।
উদ্যোক্তা হিসেবে যখন মাঠে নামেন সাহার মতিন, তখন তিনি নবম শ্রেণির ছাত্রী। সেটা ২০১৬ সালের কথা। রাজধানীর গুলশানের লেকহেড গ্রামার স্কুলের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন সাহার। এখনও কাজ করছেন নিজের উদ্যোগ নিয়ে।
এখন স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশের প্রথম সারির একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার। আর চেষ্টা করবেন নিজেকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে। এরই মধ্যে একটু একটু করে বেশ এগিয়ে গেছেন। বিভিন্ন স্থানে পোশাক প্রদর্শনীতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে তরুণ এই উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠান ‘সাহার মতিন কোচুয়ার’।
সাহার বলেন, ২০১৬ সালে কাজটা শুরু করি। তখন আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। আমি বাবাকে শখের বশে বলেছিলাম একটা কাজ করতে চাই। বাবা আমাকে খুবই উৎসাহ দিলেন। পাশাপাশি মাও আমাকে সাহস জোগালেন। বাবা বললেন তুমি শুরু করো। এরপর থেকেই আমি দোকানে দোকানে ঘুরে পছন্দের কাপড় সংগ্রহ করতে থাকি। সেগুলোতে নিজের মতো করে সাধারণ ডিজাইন দিয়ে কাজ শুরু করি।
ছোটবেলা বেলা থেকে সাজগোজের প্রতি আমার একটা দুর্বলতা ছিল। ছোটবেলায় মাকে দেখতাম নিজের ও আমাদের জন্য নিজ হাতে পোশাক কেটে ডিজাইন করতে। আমি অধিকাংশ মায়ের হাতের ডিজাইন করা পোশাক পরেছি। তো মাকে দেখে দেখে আমার ভেতর ইচ্ছা তৈরি হয়।
আমি যখন ও-লেভেল শেষ করি তখন কাজ একটু বন্ধ রেখেছিলাম। একটা প্রদর্শনী করে পড়াশোনাটা শেষ করলাম। এরপর পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আমি আবার কাজ শুরু করি। যেহেতু আমার এটা অনলাইন বেইজ বিজনেস প্লাটফর্ম, আমি অনলাইনে আমার পেজে ছবি আপলোড করব। এখান থেকেই ক্রেতারা দেখবে এবং আমার প্রতিষ্ঠানটি ধীরে ধীরে পরিচিতি লাভ করবে।
‘সাহার মতিন কোচুয়ার’ আমার বিজনেস প্লাটফর্মের নাম। বর্তমানে ফ্যাশন প্লাটফর্ম একটা বড় মার্কেট। অনেকেই পোশাক নিয়ে কাজ করছে। পোশাকের ব্যবসা করছে। আমি চেষ্টা করি আমার ক্লায়েন্টের চাহিদামতো পোশাকের ডিজাইন করতে। আমি খুব বেশি আড়ম্বর ডিজাইন করি না। হালকা ওয়েস্টার্ন ডিজাইন দিয়ে কাজ করতে বেশি পছন্দ করি।
নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করতে চাইলে কোন দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে?
প্রথমত নিজের ইচ্ছাটা থাকতে হবে। আমি এই কাজে সফল হবই। আমাকে সফল হতেই হবে। এমন সংকল্প নিজের ভেতর ইচ্ছা পোষণ করতে হবে। করতে যেয়ে একটু বাধা পেলে যদি হাল ছেড়ে দেয় তাহলে সে করতে পারবে না। অবশ্যই তাকে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে।
আমার ইচ্ছা বাংলাদেশের প্রথম সারির একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়া। আর চেষ্টা থাকবে যদি ভাগ্য সহায় হয় তবে আন্তর্জাতিক মানের একজন হওয়া। আমি আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কোনো কম্প্রমাইজ করি না। আমি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজ দেখি এবং সেভাবেই নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।
আমার বন্ধুরা, কাছের মানুষেরা খুবই সাহস জুগিয়েছে। আমার প্রদর্শনীতে এসেছে। আমার কাছ থেকে কেনাকাটা করেছে। আমার দেখাদেখি আমার এক বন্ধুও কাজ শুরু করেছে। সে পাঞ্জাবির কাজ নিয়ে প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছে।
আমার প্রতিষ্ঠানকেই অনেক বড় পরিসরে দেখার ইচ্ছা। একদিন অনেক বড় নাম হবে। সবাই একনামে চিনবে। আমার বাবা একজন ব্যবসায়ী। আমারও বাবার মতো ব্যাবসায়ী হওয়ার ইচ্ছা। এ ছাড়া বাবার প্রতিষ্ঠান আরএম গ্রুপে কাজ করার ইচ্ছা আছে।