কানাডায় সৌদি তরুণীর নতুন জীবন

Slider বিচিত্র

ঢাকা: বাড়িপালানো সেই সৌদি তরুণী রাহাফ আল-কুনুনের নতুন জীবন শুরু হয়েছে কানাডায়। বাড়িতে প্রায় বন্দিদশায় যা তিনি করতে পারতেন না, এখন তা-ই করার স্বপ্ন দেখছেন। পড়াশোনা করে চাকরি পেতে চাইছেন। বলছেন, ‘স্বাভাবিক জীবন কাটাতে’ চান তিনি।

গতকাল সোমবার কানাডীয় গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাহাফ বলেন, কানাডায় এসে তাঁর খুব ভালো লাগছে। কানাডায় প্রথমেই তিনি জোর দিচ্ছেন পড়াশোনার ওপর। এরপর একটি চাকরি পেতে চান। একটি স্বাভাবিক জীবন কাটাতে চান, যা তিনি নিজ দেশ সৌদি আরবে করতে পারতেন না। জীবন নিয়ে ভীত হয়েই তিনি পালিয়েছেন দেশ থেকে।

ঘটনাটি এক সপ্তাহ আগে ৭ জানুয়ারির। ১৮ বছর বয়সী সৌদি তরুণী রাহাফের বাড়িপালানোর ঘটনা আলোড়ন তোলে আন্তর্জাতিক মহলে। রাহাফের পরিবারের অনেক সদস্য কুয়েতে থাকে। রাহাফ বাড়ি থেকে পালিয়ে কুয়েত থেকে থাইল্যান্ড হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছিলেন। থাইল্যান্ডের ব্যাংককের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর থেকে তাঁকে কুয়েতে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয় থাই কর্তৃপক্ষ। তবে যে হোটেলে তাঁকে রাখা হয়, সেখানের কক্ষে নিজেকে তালাবদ্ধ রাখেন রাহাফ। একের পর এক টুইটে জানান, তিনি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছেন। পরিবারের কাছে ফেরত পাঠালে তাঁকে মেরে ফেলা হবে।

পরে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার অনুরোধে কানাডা রাহাফকে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেয়। শনিবার তিনি কানাডায় পৌঁছান।

রাহাফকে এমন এক সময় কানাডা আশ্রয় দিয়েছে, যখন দুই দেশের সম্পর্কে তিক্ততা বিরাজ করছে। গত বছর সৌদি আরব কয়েকজন নারী অধিকারকর্মীকে কারাবন্দী করলে কানাডা তাঁদের মুক্তির দাবি করেছিল। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সৌদি আরব কানাডার সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করে এবং কানাডা থেকে তাদের অনেক শিক্ষার্থীকে সৌদি আরবে ফিরে যেতে বাধ্য করে।

আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, কানাডায় পৌঁছানোর দুদিন পর কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাহাফ বলেছেন, তিনি ঝুঁকি নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হতো যত দিন আমি সৌদি আরবে থাকব, তত দিন আমি যা চাই, সে স্বপ্ন কখনো পূরণ হবে না। মনে হচ্ছে, আমার নতুনভাবে জন্ম হয়েছে। বিশেষ করে এখানের ভালোবাসা ও অভ্যর্থনার কারণে এই অনুভূতিটা বেশি হচ্ছে।’

নতুন বাড়িতে নতুন জীবন সম্পর্কে রাহাফ বলেন, ‘যা আমি আগে কখনো চেষ্টা করিনি, তা-ই এখন করার চেষ্টা করব। যা কখনো শিখিনি, তা এখন শিখব। জীবনকে আমি খুঁজে বেড়াব…আমার একটি চাকরি হবে এবং আমি একটি স্বাভাবিক জীবন কাটাব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *