খেলা: দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৭ উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজ ২–০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ২৪৬ রান তুলেছিল জিম্বাবুয়ে। তাড়া করতে নেমে ৩৫বল হাতে রেখেই জিতেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল
ইঙ্গিতটা সিরিজের প্রথম ম্যাচেই মিলেছে। এই সিরিজে বাংলাদেশের সামনে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে পারবে না জিম্বাবুয়ে। চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ম্যাচটা হেসেখেলে জিতে সেই ইঙ্গিতকেই সত্য বলে প্রমাণ করল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। জিম্বাবুয়ের ৭ উইকেটে ২৪৬ রান তাড়া করে জিততে ৪৪.১ ওভার লেগেছে বাংলাদেশের। ধীরে–সুস্থে ব্যাটিং না করলে জয়টা হয়তো আরও আগেই আসত।
ওপেনিংয়ে দুর্দান্ত শুরু এনে দিয়েছিলেন লিটন দাস ও ইমরুল কায়েস। এই জুটিতে এই দুজন ১৪৮ রান তুলে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটির রেকর্ডটিকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ অবধি সিকান্দার রাজার বলে অলস এক শট খেলে ফিরেছেন লিটন। তার আগে ৭৭ বলে ৮৩ রানের ইনিংস দিয়ে লিটন সেঞ্চুরির সুবাস পেলেও তিন অঙ্কে পৌঁছাতে না পারায় কিছুটা হতাশ করেছেন বৈকি। এদিক বিবেচনায় হতাশ করেছেন ইমরুলও। দেখেশুনে খেলার চালে কী দুর্দান্তই না ব্যাটিং করছিলেন! কিন্তু ‘নার্ভাস নাইন্টিজ’–এর ঘরে পা রেখে ধৈর্য্য রাখতে পারেননি। সিকান্দার রাজাকে অনর্থক উড়িয়ে মারতে গিয়ে নিশ্চিত সেঞ্চুরি বিসর্জন দিয়েছেন ইমরুল।
তার আগ পর্যন্ত ইমরুল কিন্তু আগের ম্যাচের ফর্মকে টেনে নিয়েছেন। প্রথম ম্যাচে তাঁর ১৪৪ রানের ইনিংসটি ছিল বাহারি সব স্ট্রোকে সমৃদ্ধ। আজ ১১১ বলের ইনিংসে মাত্র ৭টি চার মারলেও ধরে খেলার প্রতিজ্ঞা ছিল। ছিল স্ট্রাইক অদল–বদল করে খেলার নিদর্শনও। লিটনের সঙ্গে তাঁর ১৪৮ রানের জুটিটা এসেছে ১৪৪ বলে। আর তৃতীয় উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে তাঁর ৫৯ রানের জুটিটা এসেছে ৭০ বলে।
লিটনের ইনিংসটি ইমরুলের তুলনায় বেশি দ্যূতিময়। অন্তত স্ট্রোক খেলা বিচারে। ৭৭ বলে ৮৩ রানের এই ইনিংসে আছে ১২টি চার ও একটি ছক্কা। উইকেটের চারদিকে দুর্দান্ত সব শটে চট্টগ্রামের দর্শকদের ভালোই আনন্দ দিয়েছেন এই ওপেনার । লিটনের বিদায়ের পর উইকেটে আসা ফজলে রাব্বি সেই সিকান্দার রাজার বলেই স্টাম্পড হয়েছেন ব্রেন্ডন টেলরের হাতে। গত ম্যাচে অভিষিক্ত রাব্বি টানা দ্বিতীয় ম্যাচে আউট হন শূন্য রানে। এরপর ইমরুল ফিরলে অার কোনো ঝুঁকি নেননি মুশফিক ও মোহাম্মদ মিঠুন। চতুর্থ উইকেটে ৩৯ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নোঙর করিয়েছেন দুই ব্যাটসম্যান। মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৪০ রানে। ২৪ রানে অন্য প্রান্তে ছিলেন মিঠুন।
এর আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে জিম্বাবুয়ের ইনিংস আড়াই শ রানের নিচে বেঁধে ফেলে বাংলাদেশ। ৪৫ রানে ৩ উইকেট নেওয়া বোলার সাইফউদ্দিনের ভূমিকা ছিল তাতে সবচেয়ে বেশি। ম্যাচসেরাও এই পেস অলরাউন্ডার। শুরুতে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও শন উইলিয়ামসকে তুলে নেওয়ার পর শেষ দিকে বিপদজনক এলটন চিগুম্বুরাকেও তুলে নেন সাইফউদ্দিন। জিম্বাবুয়ের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৭৫ রান এসেছে ব্রেন্ডন টেলরের ব্যাট থেকে। শুক্রবার চট্টগ্রামেই সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে। আজ সিরিজ হার নিশ্চিত হওয়ায় জিম্বাবুয়ের জন্য তৃতীয় ম্যাচটা ধবলধোলাই এড়ানোর চ্যালেঞ্জ। আর বাংলাদেশের জন্য? এই দুই ম্যাচের পারফরম্যান্সকে আরও এক ধাপ উঁচুতে তুলে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ।