রাতুল মন্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রায় সবকটি আঞ্চলিক সড়ক খানাখন্দে ভরা। প্রধান সড়ক গুলোর মধ্যে পৌর শহর মাওনা চৌরাস্তা থেকে পাশ্ববর্তী উপজেলা কালিয়াকৈর যোগাযোগের একামাত্র সড়কের অধিকাংশ স্থান খানাখন্দে ভরা। আরেকটি সড়ক জৈনাবাজার থেকে শৈলাট সড়কেরও একই ধসা।
সড়ক দু’টির দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় অধিকাংশ স্থান খানাখন্দে ভরে গেছে। এতে এ সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী দুটি উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে প্রতিদিন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) শ্রীপুর উপজেলা কার্যালয় ও সড়ক ও জনপথ গাজীপুর অফিস সূত্রে জানা গেছে, মাওনা চৌরাস্তা- ফুলবাড়িয়া সড়কটির দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার। অন্যটি জৈনাবাজার-শৈলাট সড়কটির দৈর্ঘ্য ৭ কিলোমিটার।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, মাওনা চৌরাস্তা-ফুলবাড়িয়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে সড়কের কার্পেটিং উঠে ইটের খোয়া বের হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি পড়ে ওই সব গর্ত এখন পুকুরে রূপ নিয়েছে। সড়কে একটি গাড়ি আরেকটিকে অতিক্রম করতে পারছে না। জৈনাবাজার-শৈলাট সড়কের একই হাল। মাঝে মধ্যে যানবাহন আটকে পড়ে। পরে আরেকটি গাড়ী অন্যটিকে টেনে তুলতে হয়। এতে লম্বা লাইন লেগে যায় যানবাহনের।
মাওনা গ্রামের মো.জাবের আলীসহ চারজন কৃষক বলেন, তাঁদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য উপজেলা সদরের হাটবাজারে নিতে হয়। কিন্তু এই ভাঙাচোরা সড়কের কারণে ভ্যানচালকেরা যেতে চান না। ভ্যানচালকেরা গেলেও এ জন্য অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাঁদের। দ্রুত এ সড়কটি সংস্কার করা দরকার।
আবু মিয়াসহ তিনজন ভ্যানচালক বলেন, ভাঙাচোরা রাস্তার জন্য বেশি মাল নেওয়া যায় না। এ ছাড়া ভ্যানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে ভাঙাচোরা রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে।
নগর হাওরা গ্রামের কলেজছাত্রী সাবিনা আক্তার ও কাকলী বলেন, সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য তাঁদের অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। যানবাহন বা ভ্যানে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করলে কষ্ট হয়, সময়ও বেশি লাগে।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র মো.আনিছুর রহমান বলেন, মাওনা-ফুলবাড়িয়ার সড়কটি মুলত সওজের। ওই সড়কের কিছুটা অংশ পৌরসভায় পড়েছে। তাও যতটুকু সম্ভব সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তুলার চেষ্টা আমাদের অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.নূরুল ইসলাম বলেন, সড়কটি সংস্কার করার জন্য কয়েকবার উপজেলার প্রকৌশলীর অভিযোগ আবেদন করেও কোন ফল পাননি। এখন বর্ষা মৌসুম চলে আসছে এখন তারা তো আর সংস্কার কাজ করতে পারবে না। জনগণের ভোগান্তির শেষ হবে না এ বর্ষায়।
শ্রীপুর উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী মো.মাসুদুল হাসান জানান, জৈনাবাজার-শৈলাট সড়কটির একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন পেলে সড়কটির সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।
অন্যদিকে গাজীপুর সড়ক ও জনপথের উপসহকারি প্রকৌশলী মো.সাদ্দাম হোসেন জানান, মাওনা-ফুলবাড়িয়া সড়কের প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রীয়াধীন রয়েছে। অনুমোদন পাওয়ার সাথে সাথে কাজ শুরু হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য গত এক বছরের বেশী সময় ধরে শ্রীপুর উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন কারী শ্রীপুর- বরমী আঞ্চলিক সড়কটি যান চলাচলের জন্য একেবারে বন্ধ রয়েছে!