সিলেটে মা-ছেলে খুন, শিশু সন্তানকে উদ্ধার

Slider সিলেট

khun

 

 

 

 

 

সিলেট নগরীর খারপাড়ার মিতালী আবাসিক এলাকা থেকে মা ও ছেলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার বেলা ১২টার দিকে মিতালী ১৫/জে নম্বর বাসা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। বাসার দুই রুমে দু’জনের লাশ পাওয়া গেছে। এসময় জীবিত উদ্ধার করা হয় রাইসা নামের ৫ বছরের একটি শিশুকে। নিহতরা হলেন রোকেয়া বেগম (৪০) ও তার ছেলে রবিউল ইসলাম রোকন (১৬)। এদিকে ঘটনার পর থেকে ওই বাসার গৃহকর্মী তানিয়াকে (১৬) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

রোকেয়া বেগম সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার প্রবাসী হেলাল আহমদের স্ত্রী ও একজন পার্লার ব্যবসায়ী । রোকন এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পুলিশ নিহত রোকেয়ার বাসা থেকে তার ব্যবহৃত কম্পিউটারটি জব্দ করেছে। আর জীবিত উদ্ধার হওয়া রোকেয়ার শিশু সন্তান রাইসাকে নেয়া হয়েছে পুলিশ হেফাজতে ।

জানা যায়, রোকেয়া বেগম তার ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে খারপাড়ার মিতালী আবাসিক এলাকার ওই বাসার নিচ তলায় গত এক বছর থেকে ভাড়া থাকতেন। তাদের সাথে বাসায় একটি কাজের মেয়েও থাকত।

নিহত রোকেয়ার ভাই জাকির হোসেন জানান, গত শুক্রবার পরিবারের সদস্যদের সাথে রোকেয়াদের সর্বশেষ যোগাযোগ হয়। ওই দিন সন্ধ্যা থেকে তারা রোকেয়ার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় রোববার বোনের খোঁজ নিতে খারপাড়ার বাসায় আসেন জাকির হোসেন। বাসায় এসে ভেতর থেকে তিনি তাদের দরজা বন্ধ দেখতে পান। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরও কেউ দরজা না খোলায় তিনি বাড়ির মালিককে খবর দেন।

বাড়ির মালিক ঘটনা শুনে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ঘরে প্রবেশ করে তাদের লাশ উদ্ধার করে। এসময় ঘরের মধ্যে ক্রন্দনরত অবস্থায় রোকেয়ার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে রাইসাকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে, কাজের মেয়েকে বাসায় পাওয়া যায়নি।

জাকির জানান, মাসখানেক আগে থেকেই রোকেয়া তাকে জানিয়েছিলেন যে এই বাসায় তার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে। এই বাসা বদলানো লাগবে।

তিনি আরো জানান, রোকেয়ার স্বামী জগন্নাথপুর উপজেলার হেলাল আহমদের সাথে তার বনিবনা হচ্ছিল না। তাই তিনি ছেলে-মেয়েকে নিয়ে আলাদা থাকতেন। আর গত রমজান মাসে হেলাল আহমদ স্ট্রোক করার পর তার পরিবারের সাথে জল্লারপাড়ের একটি বাসায় থাকেন।

ব্যবসায়িক কিংবা পূর্ব শত্রুতার কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ জানিয়েছেন, মিরাবাজার খাঁর পাড়ায় মা-ছেলেকে ব্যবসায়িক কিংবা পূর্ব শত্রুতার কারণে হত্যা করা হয়েছে। তাদেরকে ছুরিকাঘাতের পাশাপাশি শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশ এরই মধ্যে হত্যার কিছু উৎস পেয়েছে। তবে, এসব বিচার-বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তিনি এও জানান, উদ্ধার করা শিশুটিকেও হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু, সে সময় সে অজ্ঞান হয়ে পড়ায় হত্যাকারীরা তাকে মৃত ভেবে ফেলে যায়।
রোববার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব তথ্য জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, হত্যাকারীরা অনেক সময় নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। যে কারণে কেউ বিষয়টি টের পায়নি। তিনি আরো জানান, শুক্রবার রাতেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে তারা ধারণা করছেন। তিনি বলেন, মহিলার বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে। নগরীর বারুতখানা এলাকার হেলাল মিয়া তার স্বামী বলে জানা গেছে। হেলাল মিয়া বর্তমানে পক্ষাঘাতগ্রস্ত (প্যারালাইজড)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *