এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের দাবিতে ১৪ দিন ধরে মহিলা ইউপি সদস্যের বাড়িতে অনশন করছেন এক কিশোরী। প্রেমিক বিয়ের আশ্বাস দিয়ে টালবাহান শুরু করেছে। তাই তার এ কর্মসূচি।
গত শনিবার (২ ডিসেম্বর) থেকে পীরগঞ্জ উপজেলার কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য সামসুন নাহারের বাড়িতে অনশন শুরু করে ওই কিশোরী।
কিশোরীর নাম তানজিলা পারভীন (১৯)। সে জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার উত্তরগাঁও গ্রামের নুরুল হকের মেয়ে।
কিশোরী তানজিলা পারভীন বলেন, গত এক বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পীরগঞ্জ উপজেলার কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের কোষাডাঙ্গীপাড়া গ্রামের রিয়াজুল হকের ছেলে নাসিম উদ্দীনের পরিচয় হয়। নিয়মিত কথা বলার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নাসিম উদ্দীন বিয়ের কথা বলে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে ওই কিশোর বিয়ে নিয়ে টালবাহানা শুরু করে এবং বিষয়টি অভিভাবকদের জানাতে অস্বীকৃতি জানায়। কোনো উপায় না পেয়ে গত শনিবার (২ ডিসেম্বর) থেকে সে তার প্রেমিক নাসিম উদ্দীনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে যায়। এরপর সেখানে প্রেমিকের বাবা রিয়াজুল হকসহ ওই পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকে মারপিট করে।
পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ গন্যমান্য ব্যক্তিরা কিশোরী তানজিলা পারভীনকে প্রেমিক নাসিম উদ্দীনের ফুপু মহিলা ইউপি সদস্য সামসুন নাহারের জিম্মায় রেখে দেয়। এরপর থেকেই ওই কিশোরী বিয়ের দাবিতে ওই ইউপি সদস্যের বাড়িতেই আমরণ অনশন শুরু করে।
দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন কিশোরী তানজিলা পারভীন।
মহিলা ইউপি সদস্য সামসুন নাহার বলেন, চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ অন্যরা মেয়েটিকে আমার জিম্মায় দিয়েছিল। তারপর মেয়েটিকে আমি অনেকবার বাড়িতে ফিরে যেতে বলেছি; কিন্তু সে বাড়িতে ফিরে যাবেনা বলে জানায়। বিষয়টি মীমাংসার জন্য আমার চাচাতো ভাই রিয়াজুল হককে অনেকবার বলেছি; কিন্তু সে কোন কথাই শোনে না।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য প্রেমিক নাসিম উদ্দীনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে ছেলের বাবা রিয়াজুল হক বলেন, আমি ও আমার পরিবার এই মেয়েটিকে গৃহবধু হিসেবে মেনে নিতে পারব না। আপনাদের যদি কিছু করার থাকে তাহলে আপনারা করতে পারেন।
কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি সহ আমার ইউপি সদস্যরা মিলে উভয় পকে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করেছি; কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। ছেলে প কোনভাবেই বিয়েতে রাজি নয়।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানার ওসি আমিরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।