রাজধানী নয়াদিল্লিতে দলের প্রধান কার্যালয়ে সদ্য সাবেক হওয়া সোনিয়া গান্ধী সন্তান রাহুলের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। এ সময় আতশবাজিতে ছেয়ে যায় আকাশ।
সোনিয়া গান্ধী থেকে রাহুল দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন এই দলের প্রবীণ নেতা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। আর দর্শকের সারিতে উপস্থিত ছিলেন রাহুলের ছোট বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
২০১৪ সালের নির্বাচনে ভরাডুবির আগের ১০ বছর ভারত শাসন করেছে কংগ্রেস। নির্বাচনের সেই বিপর্যয় এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি দলটি। এই জটিল পরিস্থিতির মধ্যে কংগ্রেসের দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী। দায়িত্ব নেওয়ার পর দেওয়া বক্তৃতায় রাহুল বলেন, ‘আমি বিনয়ের সঙ্গে দায়িত্ব গ্রহণ করছি। সব সময় মহান নেতাদের পথ অনুসরণ করেই এগোব।’
এরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি। বলেন, ‘কংগ্রেস আমাদের একবিংশ শতাব্দীতে নিয়ে এসেছে। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের মধ্য যুগে নিয়ে যাচ্ছেন, যখন মানুষকে তাদের পরিচয়ের কারণে হত্যা করা হতো, বিশ্বাসের কারণে মারধর করা হতো এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে হত্যা করা হতো।’
২০১৪ সালে মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে বলে বিভিন্ন মহলের অভিযোগ। আন্তধর্মীয় সহনশীলতা কমেছে, বিশেষ করে গো-রক্ষার নামে বিভিন্ন স্থানে মুসলমানদের ওপর হামলার ঘটনা বাড়ছে। রাহুল গান্ধী সেদিকে ইঙ্গিত করেই মোদির সমালোচনা করেন।
রাহুল গান্ধী বলেন, ‘বিজেপি ঘৃণা ও সাম্প্রদায়িকতা ছড়াচ্ছে। আমরা গড়ি আর তারা ভাঙে। তারা আগুন জ্বালায়, আমরা তা নেভাই।’ নতুন কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘দেশের পররাষ্ট্রনীতি এখন বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। এক নেতা এবং তাঁর ভাবমূর্তির অনুগত হয়ে যাচ্ছে সবকিছু। তারা (বিজেপি) আমাদের তখনই পরাজিত করতে পারবে, যখন আমরা পিছিয়ে যাব। কিন্তু কংগ্রেস তো পিছপা হবে না।’
১৯৯৮ সালে দলের ভার বর্তায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর স্ত্রী সোনিয়া গান্ধীর ওপর। সোনিয়া সেই থেকে দলপ্রধানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গতকাল দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় তিনি বলেন, ‘রাহুল আমার সন্তান। তাঁর প্রশংসা করাটা আমার জন্য সমীচীন হবে না। তাঁর প্রকৃত পরীক্ষার সময় আমি কেবল এতটুকু বলতে পারি, ক্ষমতায় থাকা ভয়ংকর লোকদের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছে সে।’