পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে অসংখ্য যানবাহন ঘাটে আটকে পড়েছে। যানবাহনের দীর্ঘ লাইন মহাসড়কের প্রায় ১০ কিলোমিটার বিস্তৃত লাভ করেছে। পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় যানজট এড়াতে অসংখ্য ট্রাক ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উথলী মোড় থেকে আরিচামুখী সড়কের দু’ধারে দাঁড় করিয়ে রাখায় অন্যান্য যানবাহন চলাচলে বিড়ম্বনায় পড়েছে। ফেরিতে যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হলেও পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্য ক্রমশ বাড়ছে। যানজটে আটকে পড়া যাত্রীসাধারণ, পরিবহন মালিক-শ্রমিকসহ ঘাট সংশ্লিষ্টরা দুর্ভোগ পোহায়। শনিবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয় ঘাটে পারের অপেক্ষায় বাস-কোচ, মাইক্রো-প্রাইভেটকারসহ প্রায় দু’হাজার পণ্যবাহী ট্রাক-লরি পারের অপেক্ষায় আটকে ছিল।
ফেরি সেক্টর বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ রুটে চলাচলকারী বহরের ছোট-বড় ২০টি ফেরির মধ্যে যান্ত্রিক ক্রুটিতে শাহ্জালাল, আমানত শাহ্, ভাষা শহীদ বরকত, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ও গোলাম মাওলা নামে ৫টি রো-রো ফেরি নারায়নগঞ্জ ডকইয়ার্ডে মেরামতে রয়েছে। বাকি ১৫টির মধ্যে বীরশ্রেষ্ট হামিদুর রহমান চলাচলে অনুপযোগী হওয়ায় ভাসমান কারখানা মধুমতিতে নোঙ্গর করে রয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটি ও বিজয় দিবসে এ রুটে পারের জন্য আসা বাড়তি পরিবহনের চাপে উভয় প্রান্তে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। উর্দ্ধত্বন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে যাত্রী দুর্ভোগ লাগবে পণ্যবাহী ট্রাক-লরির পাশাপাশি পরিবহন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। এতে ঘাটে অপেক্ষামান ট্রাক-লড়ীর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, এ রুটের ফেরি চালকরা জানিয়েছেন, পদ্মায় অস্বাভাবিক হারে পানি হ্রাস পাওয়ায় মূল চ্যানেল সংকির্ণ হয়ে এসেছে। সংকির্ণ চ্যানেলে অপরিকল্পিত ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনা ও পাইপ লাইন সম্প্রসারনের ফলে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। ড্রেজারের পাইপ এরিয়ে সতর্কতার সাথে ফেরি পরিচালনায় অতিরিক্ত সময় ব্যয়সহ প্রতিটি ফেরির ট্রিপ সংখ্যা কম হচ্ছে।
নাব্যতা সংকটে নিয়োজিত ড্রেজিং ইউনিট কর্মকর্তারা জানান, এ রুটের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে নিজস্ব ও ভাড়াকৃত ড্রেজার দিয়ে পলি অপসারণের কাজ চলছে। তবে, ভাসমান পাইপ ও অন্যান্য সরঞ্জামের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে না বলে দাবি করেন।
ঘাটে আটকে পরা পণ্যবাহী ট্রা-লরির চালকরা জানান, এরুটে ফেরি পারের জন্য অপেক্ষার প্রহর যেন কোনোভাবেই শেষ হয় না। একেকটি ট্রাক পারের জন্য দু থেকে তিন দিন পর্যন্ত ঘাট এলাকায় সিরিয়ালে থাকতে হয়। এছাড়া, বুকিং ও টিকিট কাউন্টারে নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত অর্থ না গুণলে তো কথাই নেই। পাশাপশি রয়েছে ঘাট এলাকায় দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের উটকো ঝামেলা। সবমিলিয়ে বাড়তি অর্থের বিনিময়ে ফেরি পার হতে হচ্ছে সকলকে। তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঘাট সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক পুলিশ ও বুকিং-সিরিয়াল কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা কর্তা ব্যক্তিরা।