আকায়েদ উল্লাহ কী করে উগ্রবাদে যুক্ত হলেন, তা নিয়েই এখন বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীরা। তাঁর তথ্য জানতে ঢাকায়ও কাজ করছে গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, আকায়েদের পরিবার বা বন্ধুমহলে কেউ উগ্রবাদী আদর্শে দীক্ষা নিয়েছেন কি না, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তা জানতে চাওয়া হচ্ছে।
এদিকে গত বুধবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে আকায়েদের বোমা হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি আকায়েদ উল্লাহ গত সোমবার নিউইয়র্কের পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালের পাতালপথে বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে হাতেনাতে গ্রেপ্তার হন।
গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, এফবিআইয়ের প্রতিনিধিরা গতকালও কাউন্টার টেররিজমের কার্যালয়ে এসিছেলেন। তাঁরা বাংলাদেশে আকায়েদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে চান। তাঁদের জানানো হয়েছে, আকায়েদের বন্ধু, স্বজন বা পরিচিত মহলে এ রকম কাউকে পাওয়া যায়নি, যিনি উগ্রবাদের দীক্ষা নিয়েছেন। আকায়েদের শ্বশুরের পরিবারটি ধার্মিক, তবে উগ্রবাদী নয়। আকায়েদ যুক্তরাষ্ট্রে বসেই জঙ্গিবাদের দীক্ষা নিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গত সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থানকালীন আকায়েদ বেশির ভাগ সময় নিজের স্ত্রী ও নবজাতক শিশুকে নিয়েই কাটিয়েছিলেন। এর মাঝে এক দিনের জন্য তিনি কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ক্যাম্পে গিয়েছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর স্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখতে আকায়েদ একাই কক্সবাজারে যান। তিনি সেখানে সাধারণ কিছু ত্রাণ ও ওষুধ বিতরণ করেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিক্ষোভ
বুধবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় জমায়েত হয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আকায়েদের ওই হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ‘আমরা সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে’ স্লোগান নিয়ে বাংলাদেশিরা যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদের লড়াইয়ের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
কনকনে তীব্র শীতে জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি প্রথমে একটি নীরব প্রতিবাদে অংশ নেন। পরে কাছের একটি রেস্তোরাঁর মিলনায়তনে সন্ত্রাসবাদ কর্মসূচি নিয়ে মতবিনিময়ে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য ডেভিড ওয়েপ্রিন বক্তব্য দেন।
ডেভিড ওয়েপ্রিন বলেন, আমেরিকা ও বিশ্ব সম্প্রদায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, ইসলামের বিরুদ্ধে নয়। এ লড়াই অভিবাসীদের বিরুদ্ধেও নয়। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকায় অভিবাসী আগমন বন্ধ করতে চান, কিন্তু আমেরিকা অভিবাসীদের দেশ, তাঁরাই এই দেশটিকে নির্মাণ করেছেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশি অ্যাটর্নি মইন চৌধুরী বলেন, টাইমস স্কয়ারের হামলার পর অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।