বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী আজ। বিজয় দিবসের এক দিন আগে ৭১’র ১৪ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের রেহাইচরে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন তিনি।
বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের ৪৬তম শাহাদত দিবস পালনে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি।
বরিশাল বাবুগঞ্জের বাবু হারিয়ে যান ২২ বছর ৬ মাস এক দিন বয়সে। এই বাবুই বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জের আগরপুর (জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের) রহিমগঞ্জ গ্রামের মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রেহাইচরে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে ৭১’র ১৪ ডিসেম্বর শহীদ হয়ে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব পান। ৭ বীরশ্রেষ্ঠর মধ্যে তিনি একজন। ৪৯ সালের ৮ মার্চ বাবা আব্দুল মোতালেব ও মাতা সাফিয়া খাতুনের সংসারে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর।
১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের করকোরাম এলাকায় ১৭৩ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নে ক্যাপ্টেন হিসেবে যোগ দেন তিনি। একই বছরের ৩ জুলাই শিয়ালকোট সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসে যোগ দেন স্বাধীনতা যুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে লে. কর্নেল নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন ৭ নম্বর সেক্টরের মোহদিপুর সাব সেক্টরের কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে।
বীরশ্রেষ্ঠ এই সন্তানের শেষ অভিযান ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত করার। ৭১’র ১২ ডিসেম্বর শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে অবস্থান নেন মহানন্দা নদীর ওপারে বারঘরিয়ায়। ১৩ ডিসেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মহানন্দা নদী পার হয়ে সম্মুখযুদ্ধে একের পর এক পরাস্ত করেন শত্রু বাহিনীকে। ৭১’র ১৪ ডিসেম্বর সকালে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে শুরু করেন যুদ্ধ। উত্তর দিক থেকে একটি একটি করে ট্রেজ দখল করে ও এগিয়ে যেতে থাকেন বিজয়ের দিকে। বীরদর্পে এগিয়ে গিয়ে এ যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন পাক সেনাদের।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর শিবগঞ্জের সোনামসজিদে শাহাদতবার্ষিকীকে ঘিরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। এবারও পালিত হচ্ছে নানা কর্মসূচি। কর্মসূচির মধ্যে বীরশ্রেষ্ঠর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভা।