তুহিন সারোয়ার,গাজীপুরঃ
গাজীপুরে নানান অপরাধ কর্মকান্ড বেড়ে যাওয়ার কারণে পুলিশ মাঠ পর্যায়ে ব্যস্ত। ফলে সিটি করপোরেশনের বোর্ড বাজার,সাইনবোর্ড এলাকায় মাদক ব্যবসা চরম ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চিহ্নিত স্পটগুলো ছাড়াও অন্যান্য স্থানেও মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা এর পরিধি বিস্তার করে চলছে ব্যাপক ভাবে।
মাদকদ্রব্য কেনা বেচা ছাড়াও এখান থেকে বিভিন্ন স্থানে তা সরবরাহ করা হয় বলে একটি সূত্র জানায়। সূত্রটি আরও জানায়,গভীর রাতে বাস-ট্রাক, পিকআপ, এ্যাম্বুলেন্স ও পার্সেল গাড়িতে এসব দ্রব্য পরিবহন করা হয়।
গাজীপুরের ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর দিয়ে প্রতিনিয়ত ফেন্সিডিল, গাঁজা ও প্যাথেড্রিন (এ্যাম্পুল) ডুকছে জেলার বিভিন্ন স্থানে। বড় বড় মাদকের চালান ট্রেনযোগে আসার পর টঙ্গী রেলস্টেশন থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে পৌছে দিচ্ছে একটি চক্র। পুলিশের অভিযানে মাদক বহনকারী গ্রেফতার হলেও এর মূল হোতারা বরাবরই থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। হাতের নাগালের মধ্যে মদ, গাঁজা, ইয়াবা, হেরোইন ফেনসিডিল পাওয়ার কারণে ক্রমশই আক্রান্ত হয়ে আছে এলাকার যুবসমাজ। মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়ে যাবার কারনে ব্যাবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরী করে প্রতিটি মাদকের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
সরেজমিন এবং বিভিন্ন সূত্র জানায় যে, গত এক মাস থেকে খুচরা ২০০ টাকার প্রতিটি ইয়াবা ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় আর ৫০০ টাকার ফেন্সিডিল ১২০০ থেকে ১৫০০ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে মাদকসেবীরা জড়িয়ে পড়ছে নানান অপরাধ কর্মকান্ডে,ফলে ঘটছে আইন শৃংখলার চরম অবনতি। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদকের টাকা জোগাড় করতে যুবসমাজ চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সরেজমিন এবং বিভিন্ন তথ্য মতে বোর্ড বাজার,সাইনবোর্ড,হাজিরপুকুর, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশের ১/২ কিঃমিঃ ভিতরের এলাকায় কিছু চিহ্নিত স্পট ছাড়াও মোবাইলের মাধ্যমে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য। জানা যায় যে,এসব এলাকায় প্রতিদিন কয়েক লক্ষ টাকার মাদক বিক্রি হয়।এদিকে উক্ত এলাকায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযান শেষ কবে কার্যক্রম চালানো হয়েছে তার কোন তথ্য কেউ দিতে পারেনি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং চ্যানেল সিক্স এর উপদেষ্টা মহিউদ্দীন (মহি) বলেন,আগে পুলিশের চোখ এড়িয়ে যাতায়াত করলেও বর্তমান পরিস্থিতি পুরো আলাদা। পুলিশের নজরদারী কম থাকায় অবলিলায় যাতায়াত করতে পারছে ব্যবসায়ী এবং মাদকসেবিরা। তিনি আরও বলেন,যুব সমাজের অবঃক্ষয়রোধে নিয়মিত পুলিশের নজরদারি এবং মাদকের ভয়াবহতা নিয়ে এলাকায় জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
এদিকে,৩৩ এবং ৩৪ নং ওয়ার্ডে মাদকমুক্ত যুব সমাজ গঠনের অঙ্গিকার শ্লোগান নিয়ে গড়ে উঠা সামাজিক সংগঠন “দিগন্ত যুব ও সমাজ কল্যাণ সংসদ” এর সভাপতি নূর- মোহাম্মদ শরীফ বলেন,সমাজ থেকে মাদক নির্মুল করতে আমরা মাদকের ভয়াবহতা নিয়ে লিফলেট,ব্যানার,করে প্রচার করাসহ যারা মাদকে আসক্ত তাদের মাদক থেকে দুরে থাকার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
এবিষয়ে ভোগড়া পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ জাকির হোসেন বলেন, মাদক বিক্রেতাদের বির”দ্ধে আগেও কোন আপোস করিনি এখনও করবনা। সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং থাকবে। এবিষয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতাও চান তিনি।