ছাত্রীদের ওপরে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) আজ বুধবার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বেলা একটার মধ্যে ছাত্রদের এবং বেলা তিনটার মধ্যে ছাত্রীদের ছাত্রাবাস খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আইএইচটির ছাত্রীদের ভাষ্য, ৩ ডিসেম্বর তাঁদের ক্যাম্পাসে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের একটি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছিল। এই কর্মসূচিতে কয়েকজন ছাত্রী যেতে পারেননি। এ নিয়ে ওই দিন ছাত্রলীগের নেতারা ছাত্রীনিবাসে ঢুকে ছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। তাঁরা একপর্যায়ে ভেতরের কলাপসিবল গেট পর্যন্ত চলে যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সব ছাত্রীনিবাসের শিক্ষার্থী আইএইচটির অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ দিতে যান। অধ্যক্ষ ছাত্রীদের কথা শোনেন। পরে তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এ সময় বাইরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করলে ছাত্রীরা ছাত্রীনিবাসে ঢুকতে ভয় পান। তখন অধ্যক্ষ নিজে ছাত্রীদের নিয়ে ছাত্রীনিবাসে পৌঁছে দিতে যান।
ছাত্রীরা বলেন, তাঁদের নিরাপত্তার জন্য অধ্যক্ষ নিজেই ছাত্রীদের ছাত্রীনিবাসে ঢুকিয়ে দিচ্ছিলেন। এ সময় পেছনে পড়া কয়েকজন ছাত্রীর ওপরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। এতে পাঁচজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। ছাত্রীরা অভিযোগ করেন, পুলিশ এবং অধ্যক্ষের সামনেই ছাত্রলীগের নেতারা তাঁদের ওপরে হামলা চালান। এ সময় পুলিশ কোনো ভূমিকা পালন করেননি।
তবে ছাত্রলীগের আইএইচটি শাখার সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়ার জন্য কয়েকজন সাধারণ ছাত্র বকাবকি করেন ছাত্রীদের। অথচ এ নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাদের নামে ছাত্রীরা অভিযোগ দিতে আসেন। এ সময় প্রতিষ্ঠানের বহিষ্কৃত ছাত্র মিজান পাগলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তখন ছাত্রলীগ তাঁকে ধাওয়া করে। এতে ছাত্রীরা ভয় পান। ভয়ে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের ওপরে হামলা করা হয়নি। চিকিৎসা প্রতিবেদন দেখলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইএইচটি কর্তৃপক্ষ আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। ছাত্রীদের বেলা তিনটা এবং ছাত্রদের বেলা একটার মধ্যে ছাত্রাবাস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ছাত্রলীগ ছাত্রীদের ওপরে হামলা করেনি। মেয়েরা হুড়োহুড়ি করে একটি ছোট গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতে গিয়ে পড়ে গেছেন।
তাহলে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলো কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, যদি আরও অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, এই আশঙ্কায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।