কাজ না দেওয়ায় খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত স্টার জুট মিলের প্রকল্প প্রধান আহসান কবিরকে চড়-থাপ্পড় মেরেছেন দিঘলিয়া থানা যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি গাজী জাকির হোসেন। এ সময় সেখানে ওই থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকরাম মোল্লাও উপস্থিত ছিলেন।
আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিলের প্রকল্প প্রধানের কার্যালয়ে ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহসান কবির ও জাকির হোসেন দিঘলিয়া থানায় পাল্টাপাল্টি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
স্টার জুট মিলের কর্মকর্তারা জানান, পদ্মা অয়েল থেকে স্টার জুট মিলে তেল বহনকারী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে আকরাম মোল্লার প্রতিষ্ঠান কাজ করত। নৌকায় করে ওই তেল সরবরাহ করত প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু প্রতিবারই ১০০ থেকে ১৫০ লিটার তেল কম পড়ত।
গত মে মাসে আহসান কবির ওই মিলে যোগ দেওয়ার পর তেল কম পড়ার ব্যাপারটি তিনি নজরে আনেন। এরপর মিলের জন্য ড্রামের মাধ্যমে তেল আনার সিদ্ধান্ত হয়। আর তেল বহনকারীর প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন টেন্ডার করা হয়।
আহসান কবির বলেন, ওই টেন্ডারের খবর আকরাম মোল্লার কাছে গেলে তিনি বেশ ক্ষুব্ধ হন। জুন মাসের দিকে বেশি বাড়াবাড়ি না করতে একবার হুমকিও দিয়ে যান।
প্রকল্প প্রধান বলেন, ওই ঘটনার পর আকরাম মোল্লা তাঁর ওপর বেশ রেগে ছিলেন। আজ তিনি জাকির হোসেনসহ চার থেকে পাঁচজনকে নিয়ে কার্যালয়ে ঢোকেন। এরপর তাঁদের কিছু অনৈতিক কাজের আপত্তি করায় জাকির হোসেন শার্টের কলার ধরে চড়-থাপ্পড় মারেন। এ সময় কার্যালয়ের অন্য কর্মকর্তারা ছুটে এলে জাকির হোসেন পালিয়ে যান। এ ব্যাপারে দিঘলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
তবে এই প্রতিবেদক ফোন করলে চড়-থাপ্পড় বা হাতাহাতির কথা অস্বীকার করেছেন জাকির হোসেন। তাঁর ভাষ্য, সম্প্রতি ঠিকাদারি লাইসেন্স নিয়েছেন তিনি। তাই প্রকল্প প্রধানের কাছে গিয়েছিলেন কিছু কাজ পাওয়া যায় কি না সে জন্য। ওই ব্যাপারে কথা বলার সময় আহসান কবির দলের নেতা-কর্মীদের সম্পর্কে খারাপ কথা বলায় তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয়েছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের নিয়ে কটূক্তি করায় তিনি জিডি করেছেন।
টেন্ডার ছাড়া কাজ পাওয়া যায় কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দল করি, কিছু কাজ তো চাইতেই পারি।’
দিঘলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকরাম মোল্লা বলেন, ‘জাকির হোসেনকে নিয়ে প্রকল্প প্রধানের সঙ্গে কথা বলতে যাই। কথা বলার একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।’
জানতে চাইলে তিনি বলেন, একজন লোক যদি সেখানে থাকে আর তাঁর সামনে যদি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, তাহলে এর দায়ভার কেন ওই লোকের ওপর পড়বে।
দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দুই পক্ষ থেকে দুটি অভিযোগ পেয়েছি। ব্যাপারটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’