সুচরিতা এ দেশের একজন সু-অভিনেত্রী। এই পরিচয়ে তিনি পরিচিত।
১৯৬৯ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে বাবুল ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন। নায়িকা হিসেবে স্বীকৃতি ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন ১৯৭২ সালে। শাবানা-নাদিমের সন্তান হিসেবেও অভিনয় করেছেন। পরে নাদিমের সাথে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন সুচরিতা।
সর্বশেষ, প্রজন্মের পরিচিত নায়ক মান্নার নায়িকা হিসেবে কাজ করলেও এখন তিনি শাকিব খান, সাইমন সাদিকদের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন। এফডিসিতে বদিউল আলম খোকন পরিচালিত ‘আমার মা, আমার বেহেস্ত’ ছবির সেটে একজন মা হিসেবেই দেখা মিলল সুচরিতার। সেখানেই কথা হলো সুচরিতার সঙ্গে।
এই এফডিসিতে আমি যখন ফাইভে পড়ি তখন থেকেই যাতায়াত করি। বলা যায় তখনই এসেছি, নাদিম ভাই আমাকে কোলে তুলে নিতেন।
আমি তাঁকে আঙ্কেল ডাকতাম। যখন তার নায়িকা হলাম তখন আমি কি যেন একটা প্রশ্নে জিজ্ঞেস করি, ‘আঙ্কেল এটা… তিনি আমার মুখে হাত দিয়ে থামিয়ে বললেন উঁহু এখানে আঙ্কেল বলা যাবে না। সেই থেকে আমি নাদিম ভাই বলে ডাকি-স্মৃতিচারণ করলেন শুরুর দিকের ঘটনা।
চলচ্চিত্রের প্রতি এতটাই মনোযোগী হয়ে যান যে শিক্ষাগত যোগ্যতাকে অতিক্রম করে গিয়েছে সুচরিতার অভিনয়। মেট্রিকও দেননি তিনি। সুচরিতা বলেন, অভিনয়ের প্রতি এতটাই ঝুঁকি পড়ি যে একাডেমিকভাবে আমি মেট্রিক শেষ করতে পারিনি। কিন্তু তাতে আমার কোনো কিছু যায় আসে না। আমার পড়াশোনা আমার মতোই এগিয়েছে। একাডেমিক স্বীকৃতি না থাকলেও আমি পড়াশোনা চালিয়েছি বাসায়।
নিজেকে একজন সফল মা হিসেবে দাবি করে সূচরিতা বলেন, আমার তিন ছেলেমেয়ে। এদের মধ্যে বড় ছেলে পড়াশোনা শেষ করে অস্ট্রেলিয়াতে চাকরি করছে। মেজ মেয়ে মালয়েশিয়াতে সদ্য জার্নালিজমে স্নাতকোত্তর শেষ করেছে। ছোট মেয়ে এবার ‘ও লেভেল’ দেবে। আমার ছেলেমেয়েরা আমাকে নিয়ে গর্ব করে। বলে- মা তুমি এত বিখ্যাত বিখ্যাত সিনেমা করেছ? আমিও আমার ছেলেমেয়্যেকে নিয়ে গর্ব করি।
সুচরিতার আসল নাম বেবী হেলেন। ১৯৭৭ সালে আবদুল লতিফ বাচ্চু পরিচালিত ‘যাদুর বাঁশি’ ছবিটি তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয়। এরপর জীবন নৌকা, জনি, রঙ্গীন জরিনা সুন্দরী, ডাকু মনসুর, এখোনো অনেক রাত, হাঙ্গর নদী গ্রেনেড, কথা দিলাম, ত্রাস, দাঙ্গা নাগর দোলা, দি ফাদার, বাল্য শিক্ষা, বদলা, গাদ্দার, দুনিয়াদারী, মোহাম্মদ আলী, নদের চাঁদ, ঘর-সংসার, কুদরত, সাক্ষী, আঁখি মিলন এর মতো বিখ্যাত ছবিতে অভিনয় করেছেন।
দাপটের সাথে নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করা সুচরিতা এখন মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন। তিনি বলেন, সিনেমার গল্প পছন্দ হলে এবং যদি মনে হয় আমার অভিনয়ের জায়গা আছে তাহলে আমি সে ছবি করি। আমার মা আমার বেহেস্ত ছবিটির গল্প শুনেছেন নিশ্চই, যদি শুনে থাকেন দেখবেন এখানে আমার ভূমিকা কি।
এই ছবিতে আপনি মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন এটা সবাই জানে, চরিত্রে বৈচিত্রতা কী রয়েছে? সুচরিতা বলেন, আসলে বৈচিত্র্য বলতে কিছু নেই। মা পৃথিবীর সব জায়গাতেই এক। তবে এটা নতুন প্রজন্মের গল্প। সাইমন সাদিকের চরিত্র একেবারে এই জেনারেশনের গল্প। স্বভাবতই আমি মনে করি ছবিটি সবার পছন্দ হবে।
বাংলা চলচ্চিত্রের ভবিষ্যৎ কী? সুচরিতা এই বিষয়ে বলেন, আমি আসলে কনফিউজড। আমি বলতে পারব না। আপনারা এখন চলচ্চিত্রের খোঁজ-খবর রাখেন, আপনারা জানেন। তবে আমি প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী মানুষ। অনেক স্বপ্ন দেখি। আমাদের সময় চলচ্চিত্রের যে জোয়ার ছিল তা আবার ফিরবে তবে অন্য ফ্লেভারে