ছয় বছর ধরেই এই কাজ করছেন তিনি। যখন যেখানে সুযোগ পান, দাঁড় করিয়ে রাখা গাড়ির চাকা পাংচার বা ফুটো করে দেন। এরপরই পালিয়ে যান তিনি। একবার ভেবে দেখুন, কেমন অসুবিধায় পড়তেন গাড়ির মালিকেরা? এত দিন পুলিশ তাঁকে খুঁজছিল। অবশেষে হাতেনাতে ধরা পড়লেন এই ব্যক্তি। জানেন, এই ব্যক্তি মোট কতটি গাড়ির চাকা ফুটো করে দিয়েছিলেন? ৬ হাজার!
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের বরদোঁ শহরে গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তির বয়স ৪৫ বছর। তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়নি। গত বুধবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, সমাজের প্রতি ক্ষোভ ও রাগ থেকেই গাড়ির চাকা পাংচার করতেন তিনি।
ওই ব্যক্তিকে এখন সংবাদমাধ্যমে ‘সিরিয়াল পাংচারার’ নামে অভিহিত করা হচ্ছে। তিনি নিজেই নিজেকে এই নামে ডাকার অনুরোধ করেছেন। ওই ব্যক্তি সব সময়ই পুলিশকে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ২০১৪ সাল থেকে তাঁকে খোঁজা হচ্ছিল। তাঁকে গ্রেপ্তারের ফলে বরদোঁ শহরের মানুষ এখন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি বলেছেন, ২০১১ সাল থেকে প্রতি রাতে গড়ে বিভিন্ন গাড়ির ৭০টি চাকা ফুটো করতেন তিনি। পুলিশের হিসাবে এখনো পর্যন্ত ৬ হাজার গাড়ির চাকা পাংচার করেছেন তিনি।
ওই ব্যক্তি এতই চতুর ছিলেন যে, চাকা পাংচার হওয়ার জায়গায় কোনো ডিএনএ চিহ্ন পাওয়া যেত না। এ ছাড়া ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজেও ধরা দিতেন না তিনি। অনেক সময় এত নিখুঁতভাবে চাকা ফুটো করতেন যে, বোঝাই যেত না চাকায় হাওয়া নেই! কিছু দূর চালানোর পর গাড়ির মালিক বুঝতে পারতেন, চাকায় গড়বড় হয়েছে।
বরদোঁ শহরের সরকারি আইনজীবী মেরি-ম্যাডেলিন অ্যালিয়ট গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘এটি আসলে প্রাণখুলে হাসার মতো একটি ঘটনা।’ তবে এ কথা শুনলে বন্দর শহরটির অধিবাসীরা রাগ করতে পারেন। কারণ গাড়ির চাকা ফুটো করার ঘটনায় দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত ছয় বছরে পুলিশের কাছে প্রায় ১ হাজার ১০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে।
এরই মধ্যে সব অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী মাসে এসব মামলার শুনানি হতে পারে।