রাজধানীর বাজারগুলোতে সরবরাহ বাড়ায় কমতে শুরু করেছে শীতের সবজির দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি সবজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে এক দিনের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে কাঁচামরিচের দাম। অন্য দিকে স্থিতাবস্থায় রয়েছে পেঁয়াজের দাম। আগামী সপ্তাহে পেঁয়াজের বাজার কিছুটা কমতে পারে বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি বেগুন ৫০ টাকা, ধনিয়াপাতা ৮০-৯০, গাজর ৮০, শসা ৪০, কাঁচামরিচ ২০০, আলু ২০, পেঁপে ২০-২৫, সিম ৪০-৫০, টমেটো ৮০-৯০, কাঁচা টমেটো ৪০-৫০, চিচিঙ্গা ৫৫-৬০, প্রতি পিস বাঁধাকপি ২০-২৫, প্রতি পিস ফুলকপি ২০-২৫, বরবটি ৫০-৫৫, পেঁয়াজপাতা ৫০ ও লালশাক ১০ টাকা করে আঁটি বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কম।
এ দিকে একদিনের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে কাঁচামরিচের দাম। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়, যা গত বুধবার ছিল ১০০-১২০ টাকা।
মালিবাগ কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা ফাইজুল ইসলাম রাঙ্গা জানান, ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি করছেন ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। ১০০ গ্রাম মরিচ ২০ টাকা এবং ২৫০ গ্রাম মরিচ ৫০ টাকার নিচে বিক্রি করছেন না। অথচ একদিন আগেও ব্যবসায়ীরা ২৫০ গ্রাম মরিচ ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করেছেন। একের পর এক নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। কিন্তু কোনো পদপে নেয়া হচ্ছে না। সব বোঝা এসে পড়ছে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের ওপর। এর আগে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়লো, এখন আবার মরিচের দাম বেড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে তো আমাদের জীবন চালানো দুরূহ হয়ে পড়বে।
মুদগা কাঁচাসবজি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর বলেন, আড়তে মরিচের দাম বেড়ে গেছে। বুধবারের তুলনায় শুক্রবার দ্বিগুণ দাম দিয়ে আড়ত থেকে মরিচ আনতে হয়েছে। বেশি দাম দিয়েও আড়তে মরিচ পাওয়া যাচ্ছে না। আমি অল্প পেয়েছি। কিন্তু এখানকার বেশির ভাগ ব্যবসায়ীই আড়তে গিয়ে মরিচ পাননি।
অন্য দিকে গত কয়েক দিন যাবৎ স্থিতাবস্থা বিরাজ করছে পেঁয়াজের বাজার। নভেম্বর মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে দেশী ও আমদানি করা পেঁয়াজ যথাক্রমে ৮০ ও ৬০ টাকা বিক্রি হলেও শেষ সপ্তাহে এসে তা ১০০ টাকায় পৌঁছে।
সবশেষ খুচরা বাজারের তথ্যানুযায়ী, কেজিপ্রতি দেশী পেঁয়াজ ৯৫-১০০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিসেম্বরের শুরুর দিকে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে ক্রেতাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন বিক্রেতারা। কিন্তু দাম না কমে উল্টো বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে ােভের সৃষ্টি হয়েছে।
রাজধানীর বাসাবো কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা জেবা তাসনীম জানান, বিক্রেতারা এতদিন বলে এসেছিলেন যে ডিসেম্বরে পেঁয়াজের দাম কমবে। কিন্তু এখন পেঁয়াজের দাম আরো বেড়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছে। এভাবে হুট করে বাজারে পণ্যের দাম বাড়ার ফলে আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
টানা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চালের বাজারে বিরাজ করছে অস্থিরতা। প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০, মিনিকেট ৬২, বিআর-২৮ ৫০-৫৫ ও স্বর্ণা-পারিজা ৪৬ টাকা।
এ ছাড়া সর্বশেষ খুচরা বাজার দর অনুযায়ী দেশী রসুন ৮০ টাকা, আমদানি রসুন ৯০, দেশী মসুর ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কাতল মাছ ২৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০, রুই ১৮০-২৮০, সিলভারকার্প ১৩০, তেলাপিয়া ১৩০, শিং ৪০০ টাকা ও চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গোশতের বাজার রয়েছে গত সপ্তাহের দর অনুযায়ী। প্রতি কেজি গরুর গোশত ৪৮০-৫০০ টাকা, খাসি ৭০০-৭৫০ ও ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কক মোরগ প্রতি পিস সাইজ অনুযায়ী দাম ১৫০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।