বালিকা বিদ্যালয়ে ছেলেদের ভর্তি হতে মাইকিং!

Slider বিচিত্র

597d663f179b9dfae4f379979dfdaf62-5a1d51130b750

 

 

 

 

 

৬৩ বছর ধরে বালিকা বিদ্যালয়টিতে মেয়েরাই পড়ে আসছে। হঠাৎ করে ওই বিদ্যালয়ে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদের ভর্তি হতে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। অথচ ছেলেদের ভর্তি করার আবেদনটি নাকচ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ ঘটনায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ঘটনা পটুয়াখালীর বাউফলে কালাইয়া হায়াতুন্নেচ্ছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। মেয়ে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ছেলেদের ভর্তি হওয়ার জন্য গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার কালাইয়া বন্দরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হয়।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫৪ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আর বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ছাত্রীসংখ্যা ৩৫৫।

এ ঘটনাকে ‘আজব’ ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক। তাঁরা অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক অতি উৎসাহী হয়ে এ ধরনের বিতর্কিত কাজ করছেন। তাঁরা এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এক অভিভাবক বলেন, ১৯৫৪ সাল থেকে যে বিদ্যালয়টিতে শুধু মেয়ে শিক্ষার্থীরা পড়ে আসছে এবং বিদ্যালয়টির নামও বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এখন ছেলে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করালে বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। তিনি আরও বলেন, এ রকম হলে তাঁর মেয়েকে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাবেন।

ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, ছেলেদের ভর্তি করালে তারা এ প্রতিষ্ঠান ছেড়ে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুনূর রশিদ মাইকিং ও লিফলেট বিতরণের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকে এ বিদ্যালয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ছেলে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হবে। বিষয়টি প্রচারের জন্য মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।

বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এ বি এম রেজা মোল্লা বলেন, পাশের কালাইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহশিক্ষা চলছে। ফলে কালাইয়া হায়াতুন্নেচ্ছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আশানুরূপ ছাত্রী ভর্তি হচ্ছে না। এ কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং ছেলেদের ভর্তি করানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আবেদন করা হয়েছে।

ইউএনও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহামুদ জামান বলেন, ‘সরকারি বিধি অনুযায়ী বালিকা বিদ্যালয়ে শুধু মেয়ে শিক্ষার্থীরাই পড়াশোনা করবে। এ কারণে আবেদন নাকচ করা হয়েছে। এরপরেও মাইকিং কিংবা লিফলেট বিতরণ করানোটা ঠিক হয়নি।’

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ‘বালিকা বিদ্যালয়ে ছাত্র শিক্ষার্থী ভর্তি করার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *