ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডস মানেই নতুন কিছু। এবারের আসরেও সেটা প্রমাণিত হলো আরও একবার। অতিথিদের তালিকায় যুক্তরাজ্যের অভিজাত মহল আর নৈশভোজের টেবিলে বাংলাদেশি খাবার। সব মিলিয়ে ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডস আরও একবার জানান দিল কারি-শিল্পের অন্য সব আয়োজনের চেয়ে এটি কেন সেরা।
প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সশরীরে আসতে পারেননি। তবে দেখা দিয়েছেন ভিডিও বার্তায়। তিনি বলেছেন, ব্রিটেনে কারি রেস্টুরেন্টগুলোর জনপ্রিয়তায় এখন আর বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। আজ যাঁরা বিজয়ী, তাঁরা নিঃসন্দেহে দেশ সেরা রাঁধিয়ে।
এ আয়োজন কেবল জৌলুশ ছড়ানোর জন্য নয়। বাংলাদেশিদের দাবিদাওয়া তুলে ধরার জন্যও এ আয়োজন একটি বড় সুযোগ। ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডসের প্রতিষ্ঠাতা এনাম আলী এমবিই তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশ থেকে ব্রিটিশ ভিসা অফিস দিল্লিতে সরিয়ে নেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, বাংলাদেশিদের উপেক্ষা করার সুযোগ আর নেই। ব্রিটিশ ভিসা-নীতির কারণে কারি-শিল্পের কর্মী-সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে জানিয়ে এনাম আলী বলেন, ব্রিটেনের অর্থনীতির স্বার্থে কারি-শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সে জন্য রেস্টুরেন্ট কর্মী আনার সুযোগ সৃষ্টি করতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। কারি-শিল্পের চলমান সংকট নিরসনে ১০০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন সরকারের কাছে দাখিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের নেতা ভিন্স ক্যাবল বলেন, ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ) গণভোটের আগে বেশ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে ইইউর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গেলে এশিয়া থেকে রেস্টুরেন্ট কর্মী আনার পথ সুগম হবে। কিন্তু এখন প্রতিশ্রুতিদাতাদের ভাব দেখে মনে হয়, তাঁরা ওই ধরনের কোনো প্রতিশ্রুতিই দেননি। ভিন্স ক্যাবল জানান, তিনি স্বল্পমেয়াদি ভিসা চালু করে রেস্টুরেন্ট কর্মী আনার পক্ষে। এ লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মিলে কাজ করবেন।
অনুষ্ঠানে ব্রিটেনের সেরা রেস্টুরেন্ট ও শেফদের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন অতিথিরা। এ ছাড়া ছিল মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। পশ্চিমা ঘরানার দুর্দান্ত পরিবেশনা তো ছিলই, ছিল বাউলসম্রাট আবদুল করিমের গানের পরিবেশনা। পাশাপাশি ছিল রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওপরে তৈরি ভিডিও চিত্রের প্রদর্শনী।