যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক দাবি করেছেন বুলেটপ্রুফ ম্যাটেরিয়াল হিসাবে পলিএমাইড ও ইস্পাতের তুলনায় গ্রাফিন বেশি কার্যকর। কেননা গ্রাফিনের আছে ইস্পাতের তুলনায় ১০ গুণ শক্তিশালী আঘাত সহ্য করার সামর্থ্য। সম্প্রতি, সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে আসে।
গ্রাফিন মূলত কার্বনের একটি রূপ। এটি অত্যন্ত পাতলা, সরু এবং স্বচ্ছ পাতের মতো। খুব অল্প ওজন এবং তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবহনে অত্যন্ত কার্যকারি। বিজ্ঞানীরা ২০০৩ সালে গবেষণাগারে প্রথম গ্রাফিন তৈরি করেন। এটির গঠন একক পরমাণুর বিন্যাসে তৈরি মৌচাকের মতো।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ জে হওয়াং লি ও তাঁর সহযোগীরা লেজার ব্যবহার করে সিলিকার তৈরি সূক্ষ্ম বুলেট পর্যবেক্ষণ করেন, যেগুলো গ্রাফিনের ১০ থেকে ১০০ স্তরের পাত ভেদ করেছিল। বুলেটবিদ্ধ হওয়ার আগে ও পরে গ্রাফিন গতিশক্তির স্তরগুলো তুলনা করে দেখেন তারা। ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায়, গ্রাফিন আঘাত পাওয়ার পর কোনাকুনিভাবে প্রসারিত হয়ে বিভিন্ন দিকে শক্তি ছড়িয়ে দেয়। ছোট পরিসরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মারার পরীক্ষা চালিয়ে গ্রাফিনের অসাধারণ শক্তি, নমনীয়তা ও কাঠিন্য দেখা যায়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আন্দ্রে গিম ও কনস্টানটিন নোভোসেলভ গ্রাফিন আবিষ্কারের স্বীকৃতি হিসেবে পদার্থবিদ্যায় ২০১০ সালে নোবেল পুরস্কার জয় করেন। বিজ্ঞানীরা মনে করেন সরু, শক্তিশালী, নমনীয় এবং বিদ্যুৎ পরিবাহী এই পদার্থ ব্যবহার করে ইলেকট্রনিকস ও অন্যান্য প্রযুক্তিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা যাবে।