মিসরে উত্তর সিনাই প্রদেশে শুক্রবারের হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত। তবে এই হামলার ধরন জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে বেশ মিলে যায়। আর সিনাই উপদ্বীপে আইএস এবং তাদের ভাবধারাসম্পন্ন স্থানীয় জঙ্গিদের উপস্থিতি বেশ কয়েক বছর ধরে।
অনেকটা ত্রিভুজ আকৃতির উপদ্বীপটির দু্ই পাশে ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগর। ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় হোসনি মোবারকের পতনের পর থেকে সিনাই ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে জঙ্গিরা মাথাচাড়া দেওয়ায়। ২০১৩ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর পরিস্থিতির সুযোগে জঙ্গিরা ফের সক্রিয় হয়। সামরিক অভ্যুত্থানের সময় এবং পরবর্তী সময় প্রেসিডেন্ট হয়ে আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি পূর্ববর্তী ক্ষমতাসীন দল মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন শুরু করেন। এতে স্থানীয় অনেককে কাছে টেনে নেয় জঙ্গিরা।
২০১৪ সালে ওলিয়াত সিনাই নামে স্থানীয় একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠীর উত্থান হয়। তারা আইএসের প্রতি নিজেদের আনুগত্য প্রকাশ করে। সিনাইয়ের বেদুইনরা বহু বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অবহেলিত ছিল। তাদের সেই ক্ষোভকেও কাজে লাগায় উগ্রবাদীরা।
সংঘবদ্ধ হয়ে এই পর্যন্ত বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। তাদের হামলার অন্যতম লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। গত সেপ্টেম্বরে সিনাইয়ের আল-আরিস এলাকায় পুলিশের গাড়িবহরে আইএস সংশ্লিষ্ট জঙ্গিদের হামলায় ১৮ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছিলেন।
আর যেই মসজিদে হামলা হয়েছে তা সুফিবাদে বিশ্বাসী লোকদের কেন্দ্রস্থল। আইএস এবং এর অনুসারীরা সালাফিপন্থী। সুফিবাদের সমালোচক। এর আগেও সিনাইয়ে সুফিবাদে বিশ্বাসীরা মাঝেমধ্যে উগ্রবাদী হামলার শিকার হয়েছেন। সুফি মতবাদে বিশ্বাসী এক নেতাকে অপহরণের পর শিরশ্ছেদ করা হয়েছে।