অণুগল্প- উপোষ
—————-আবদুস শাহেদ শাহীন
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
রাতে বাঁচিয়ে রাখা ঠাণ্ডা ক’টা ভাত লবণ আর কাচা মরিচ দিয়ে গপাগপ গিলে এই ভোরেই গামছাটা কাধে নিয়ে স্টেশনে দৌড়ায় রতন।
বউ ছেলেমেয়েরা এখনও ঘুমাচ্ছেই। শুধু তারই
আজ ঘুম থেকে জাগতে দেরি হয়ে গেছে। ট্রেনটা সে পাবে কিনা এই সন্দেহ নিয়ে প্রায় দৌড়েই সে স্টেশনে পৌঁছায়। হন্তদন্ত হয়ে এক বাদামওলায়াকে জিজ্ঞেস করে- ভৈরবে যাওনের গাড়িডা কি গেছেগা ভাই?
বাদাম ওয়ালা বলে- না, অহন্তরি আহে নাই।
একথা শুনে রতনের বুকে প্রাণ ফিরে আসে। সে স্টেশনের খুটির সাথে হেলান দিয়ে বসে জোরে একটা নিঃশ্বাস ছাড়ে।
ভৈরবে কুলির কাজ করে রতন। একদিন কাজে না গেলে পরদিন বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে উপোষ করা ছাড়া গতি নেই। অভাবের সংসার, তার উপর ছেলেমেয়েতে ঘর ভর্তি। অসুস্থ বউ, সারাদিন ঘরে খটরমটর লেগেই থাকে।
খুটিতে হেলান দিয়ে বসে সে গাড়ির অপেক্ষা করে আর তার সংসারের সকল অনটন তার মনে এসে ভীর করে। ভাবতে ভাবতে তার চোখে ঘুম এসে যায়। মাঝেমধ্যে সে জোর করে চোখ খোলে দূরে রেললাইনের শেষপ্রান্তে দেখে নেয় গাড়ি আসছে কী না। না, গাড়ির খবর নেই। সে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঘুমায়, ঘুমটা সে চোখ থেকে সরাতেই পারছেনা।
ঘুমঘোরে সে ভাবে- ট্রেন এলে তো সে জেগেই যাবে, বাঁশি বাজবে, লোকজন ওঠানামা করবে, হৈচৈ হবে, এসব ভাবতে ভাবতেই গভীর ঘুমে তলিয়ে যায় সে।
যখন ঘুম ভাঙলো তখন সে চারিদিকে তাকায়, চোখ কচলে ভালোভাবে সব দেখতে চেষ্টা করে। স্টেশনের সব দোকানে দোকানে আলো জ্বলছে, বাদামওয়ালার ঝুড়িতেও মিটিমিটি জ্বলছে কুপিবাতি।
রতন কি করবে বুঝতে পারছিলো না। তার শুধু মনে হচ্ছিলো- গতরাতে সে ভালো ঘুমাতে পারেনি, বউটা পোয়াতি, কিন্তু তবুও ঘুমের সময় বিরক্ত করে! প্রায় রাতেই তার ঘুম হয়না।
আজ বাড়ি গিয়ে বউকে কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা সে। বাড়ির দিকে তার পা এগুচ্ছেনা মোটেও। ছেলেমেয়েরা অপেক্ষায় আছে- বাবা চাল ডাল নিয়ে বাড়ি ফিরবে, মা রান্না করতে করতে চিল্লাচিল্লি করে পাড়া মাথায় তুলবে, পরে গরম গরম ভাত ডাল দিয়ে খেয়ে ঘুমাবে। খাওয়ার সময় মায়ের হাতে ধপাস ধপাস মারও খাবে কেউকেউ!
কিন্তু সারাদিনের উপোষ রতন বাড়ি ফিরছে শূন্য হাতে, সন্তানদের উপোষ মুখগুলো ভাসছে রতনের চোখে। ভাসছে রাতে ঘুম না হবার দৃশ্য।
—————-আবদুস শাহেদ শাহীন
রাতে বাঁচিয়ে রাখা ঠাণ্ডা ক’টা ভাত লবণ আর কাচা মরিচ দিয়ে গপাগপ গিলে এই ভোরেই গামছাটা কাধে নিয়ে স্টেশনে দৌড়ায় রতন।
বউ ছেলেমেয়েরা এখনও ঘুমাচ্ছেই। শুধু তারই
আজ ঘুম থেকে জাগতে দেরি হয়ে গেছে। ট্রেনটা সে পাবে কিনা এই সন্দেহ নিয়ে প্রায় দৌড়েই সে স্টেশনে পৌঁছায়। হন্তদন্ত হয়ে এক বাদামওলায়াকে জিজ্ঞেস করে- ভৈরবে যাওনের গাড়িডা কি গেছেগা ভাই?
বাদাম ওয়ালা বলে- না, অহন্তরি আহে নাই।
একথা শুনে রতনের বুকে প্রাণ ফিরে আসে। সে স্টেশনের খুটির সাথে হেলান দিয়ে বসে জোরে একটা নিঃশ্বাস ছাড়ে।
ভৈরবে কুলির কাজ করে রতন। একদিন কাজে না গেলে পরদিন বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে উপোষ করা ছাড়া গতি নেই। অভাবের সংসার, তার উপর ছেলেমেয়েতে ঘর ভর্তি। অসুস্থ বউ, সারাদিন ঘরে খটরমটর লেগেই থাকে।
খুটিতে হেলান দিয়ে বসে সে গাড়ির অপেক্ষা করে আর তার সংসারের সকল অনটন তার মনে এসে ভীর করে। ভাবতে ভাবতে তার চোখে ঘুম এসে যায়। মাঝেমধ্যে সে জোর করে চোখ খোলে দূরে রেললাইনের শেষপ্রান্তে দেখে নেয় গাড়ি আসছে কী না। না, গাড়ির খবর নেই। সে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঘুমায়, ঘুমটা সে চোখ থেকে সরাতেই পারছেনা।
ঘুমঘোরে সে ভাবে- ট্রেন এলে তো সে জেগেই যাবে, বাঁশি বাজবে, লোকজন ওঠানামা করবে, হৈচৈ হবে, এসব ভাবতে ভাবতেই গভীর ঘুমে তলিয়ে যায় সে।
যখন ঘুম ভাঙলো তখন সে চারিদিকে তাকায়, চোখ কচলে ভালোভাবে সব দেখতে চেষ্টা করে। স্টেশনের সব দোকানে দোকানে আলো জ্বলছে, বাদামওয়ালার ঝুড়িতেও মিটিমিটি জ্বলছে কুপিবাতি।
রতন কি করবে বুঝতে পারছিলো না। তার শুধু মনে হচ্ছিলো- গতরাতে সে ভালো ঘুমাতে পারেনি, বউটা পোয়াতি, কিন্তু তবুও ঘুমের সময় বিরক্ত করে! প্রায় রাতেই তার ঘুম হয়না।
আজ বাড়ি গিয়ে বউকে কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা সে। বাড়ির দিকে তার পা এগুচ্ছেনা মোটেও। ছেলেমেয়েরা অপেক্ষায় আছে- বাবা চাল ডাল নিয়ে বাড়ি ফিরবে, মা রান্না করতে করতে চিল্লাচিল্লি করে পাড়া মাথায় তুলবে, পরে গরম গরম ভাত ডাল দিয়ে খেয়ে ঘুমাবে। খাওয়ার সময় মায়ের হাতে ধপাস ধপাস মারও খাবে কেউকেউ!
কিন্তু সারাদিনের উপোষ রতন বাড়ি ফিরছে শূন্য হাতে, সন্তানদের উপোষ মুখগুলো ভাসছে রতনের চোখে। ভাসছে রাতে ঘুম না হবার দৃশ্য।
বস গল্পটা প্রকাশ করলে ভালো হয়