ঢাকা: কাঁদছে মিশর। মাতম চলছে চারদিকে। শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করতে গিয়ে কমপক্ষে ২৩৫ জন মুসল্লি লাশ হয়েছেন। এ হিসাব রাষ্ট্রীয়। বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১২০ জন।
তার মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থা অনেকের। প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি’র সরকার দেশজুড়ে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। জুমার নামাজ শেষে উত্তর সিনাই প্রদেশের বীর আল আবেদ এলাকায় ওই মসজিতে বোমা ও বন্দুক হামলা করা হয়। নামাজ শেষ হওয়ার পর পরই এ হামলায় চারদিকে তখন সৃষ্টি হয় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। মুহূর্তে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মুসল্লিরা। রক্তে সয়লাব হয়ে যায়। আহতদের আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারি হতে থাকে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত স্থানীয় পর্যায়ের ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভেন্ট (আইসিল) হামলার দায় স্বীকার করেছে। এ ছাড়া বাইরের অন্য কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন এর দায় স্বীকার করে নি। প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া বক্তব্যে এ হামলাকে কাপুরুষোচিত ও ‘ক্রিমিনাল’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, হামলাকারীদের বিনা শাস্তিতে ছেড়ে দেয়া হবে না। তার ভাষায়, আমাদের শহীদানদের বদলা নেবে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। তারা নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনঃস্থাপন করবে। ওদিকে, হামলার পর পরই বীর আল আবেদ পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপক আকারে বিমান হামলা শুরু করেছে সেনাবাহিনী। সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, হামলাকারীরা একটি গাড়িতে করে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। জুমা নামাজের পর যখন বয়ান চলছিল ঠিক সে সময় তারা হামলা করে। স্থানীয় মিডিয়া বলছে, তারা আগে থেকেই বিস্ফোরক পুঁতে রেখেছিল। তা বিস্ফোরণ ঘটিয়েই মুসল্লিদের ওপর গুলি শুরু করে তারা। এ সময়ে দিকভ্রান্ত হয়ে এলোমেলো দৌড়াতে থাকেন মুসল্লিরা। তখন তাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয়। মিশরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচার করা ছবিতে দেখানো হয়েছে, সারি ধরে লাশ শুইয়ে রাখা হয়েছে মসজিদের মেঝেতে। তাদের বেশির ভাগেরই মুখ সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। অন্যদের দেহ ঢেকে রাখা হয়েছে জায়নামাজ দিয়ে। লাশের পাশে বেশকিছু নারী ও পুরুষকেও দেখা গেছে। উল্লেখ্য, এর আগেও সিনাইয়ে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। তাতে টার্গেট করা হয়েছিল নিরাপত্তা রক্ষাকারী ও খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের। তবে এ এলাকায় মসজিদে হামলা হওয়ার ঘটনা বিরল। বীর আল আবেদ মসজিদটিকে তাই হামলাকারীদের টার্গেট করা সহজ হয়েছে। তা ছাড়া এটি মূল শহর থেকে বাইরে। এ মসজিদটি সুফিবাদ আদর্শ অনুসরণ করে।