ঝিনাইদহে মাসুদুর-মাসুমের আরও এক ভাই নিখোঁজ

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

4e7c58ca5c74cf21f8d2ce244b8dde96-5a18cd9fb6568

ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ থেকে ‘নিখোঁজ’ মাসুদুর রহমান ও মাসুম বিল্লাহর আরও এক ভাই দুই বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁর নাম সাজেদুর রহমান (২৬)। সম্প্রতি পরিবার খবর পায় যে সাজেদুর গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে আছেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি।

সাজেদুর সম্প্রতি ‘নিখোঁজ’ হওয়া মাসুদুরের (২৪) আপন বড় ভাই ও মাসুমের (১৬) চাচাতো ভাই। সাজেদুর ট্রাকচালকের সহকারী ছিলেন। ট্রাকের সঙ্গে যাচ্ছেন বলে ২০১৫ সালের শুরুর দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। এই দুই বছর তাঁর কোনো সন্ধান নেই।

গত বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের হরিন্দিয়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় সাজেদুর ও মাসুদুরের বৃদ্ধ মা ফিরোজা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, দুই বছর এক ছেলের কোনো সন্ধান নেই। তাঁর জন্য সারাক্ষণ চিন্তায় থাকেন। এই অবস্থায় আরেক ছেলেকে (মাসুদুর) দিনের বেলায় উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো। তারও কোনো সন্ধান নেই। এখন কার কাছে যাবেন, ভেবে পাচ্ছেন না।

ফিরোজা বেগম বলেন, সাজেদুরকে চট্টগ্রাম থেকে পুলিশে ধরেছে বলে কদিন আগে জানতে পারেন। পরে পরিচিত একজনের মাধ্যমে শুনেছিলেন, সাজেদুর কাশিমপুর কারাগারে আছে। এরপর তিনি ও তাঁর স্বামী মমিনুল ইসলাম কাশিপুর কারাগারে যান। কিন্তু কারাগার থেকে জানানো হয়, এমন কেউ সেখানে আটক নেই।

ফিরোজা-মমিনুল দম্পতির পাঁচ ছেলে আর এক মেয়ে। পরিবারটি জানায়, সাজেদুরের ভাই কলেজছাত্র মাসুদুরকে গত ১২ অক্টোবর বিকেলে একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার সময় গ্রামের রাস্তায় ছিলেন তিনি। এরপর ১৫ নভেম্বর রাতে বাড়ি থেকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সাজেদুরের চাচাতো ভাই মাদ্রাসাছাত্র মাসুম বিল্লাহকে।

কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা  বলেন, ওই পরিবারেরই একজন সাজেদুর দুই বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন, এটা তিনি সম্প্রতি শুনেছেন। তবে তিনি কোথাও আটক হয়েছেন, এমন খবর থানায় আসেনি। আর সম্প্রতি নিখোঁজ হওয়া দুই ভাইকে খোঁজা হচ্ছে।

 থানায় জিডি

এদিকে নিখোঁজ মাসুম বিল্লাহর বাবা আমিনুল ইসলাম গত বুধবার কোটচাঁদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এতে মাসুমকে তুলে নেওয়ার ঘটনা এবং আগে-পরের কিছু ঘটনা উল্লেখ করেছেন তিনি।

জিডিতে বলা হয়, মাসুমকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। তখন গ্রামের বাসিন্দা আবু বক্কর তাঁকে বলেন, ১৫ নভেম্বর বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁর মুঠোফোনে অজ্ঞাত একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। অপর প্রান্তের ব্যক্তিটি মাসুম বিল্লাহ বাড়িতে আছে কি না, খবর নেন। ওই রাতেই মাসুম বিল্লাহকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ২২ নভেম্বর দুপুরে কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ওহিদুল ইসলাম ওই নম্বরে ফোন দেন। তখন অপর প্রান্তের ব্যক্তিটি নিজেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী একটি বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দেন। তবে তিনি কোথায় কর্মরত আছেন, তা জানাতে অস্বীকার করেন।

এ প্রতিবেদক বৃহস্পতিবার ওই নম্বরে ফোন দিলে ওই ব্যক্তি নিজের পরিচয় বলতে রাজি হননি। আমিনুল ইসলামের জিডিতে তাঁর ফোন থেকে কথা বলার প্রসঙ্গটি এসেছে, এ কথা জানালে ওই ব্যক্তি বলেন, তিনি যেকোনো নম্বরে কথা বলতেই পারেন। এরপর ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোটচাঁদপুর থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, নিখোঁজ মাসুমের বাবা জিডিতে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। পুলিশ সে মোতাবেক জিডি নিয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *