ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পরিচ্ছন্ন ভারতের প্রচার চালিয়ে আসছেন। তবে নিজ রাজ্য গুজরাটের ভাদনগরের চিত্র সেই কর্মসূচি ম্লান করে দিয়েছে। সেখানে বেশির ভাগ বাড়িতেই টয়লেট বা শৌচাগার নেই।
ভাদনগরে গিয়ে নারীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের এমন অভিজ্ঞতাই তুলে ধরেছেন বিবিসির প্রতিনিধি প্রিয়াঙ্কা দোবে।
গুজরাটের মেহসানা এলাকার ভাদনগরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্ম ও বেড়ে ওঠা। ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য এই এলাকাকে পর্যটনকেন্দ্রে উন্নয়নের কাজ চলছে।
মেহসানা এলাকার রোহিত ভাস গ্রামে দলিত সম্প্রদায়ের বাস। সেখানে ঢোকামাত্র প্রিয়াঙ্কার স্মার্টফোনে বার্তা আসে তিনি ভাদনগর ওয়াইফাই জোনে আছেন। কিন্তু শৌচাগারের খোঁজ করলে গ্রামের নারীরা তাঁকে নিয়ে যান খোলা মাঠে।
বাসিন্দারা জানায়, রোহিত ভাস গ্রামে নারী ও পুরুষের প্রাকৃতিক কাজ সারার জন্য আলাদা দুটি খোলা জায়গা রয়েছে। সেখানেই রোজ সকালে এই কাজ সারতে হয় তাঁদের।
৩০ বছরের দাকসা বেন অভিযোগ করেন, পয়োনিষ্কাশনের নালাটিও খোলা থাকে। ছোট শিশু ও কিশোরীদেরও মাঠে গিয়ে কাজ সারতে হয়।
দলিত সম্প্রদায়ের আরেক নারী নির্মলা বেন বলেন, মোদির সরকার আমাদের জন্য ঘর ও শৌচাগার নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু আমরা কিছুই পাইনি।
৭০ বছরের মানি বেন মরচে ধরা টিনের কৌটা নিয়ে যাচ্ছিলেন। বললেন, খুব সকালে এই টিন নিয়েই খোলা মাঠে যেতে হয় তাঁকে।
এসব নারীদের কাছে প্রিয়াঙ্কা জানতে চান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁরা কী চান? একবাক্যে উত্তর আসে, শৌচাগার। খোলা জায়গায় অনাবৃত হওয়ার লজ্জা থেকে বাঁচতে চান এই নারীরা।
২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর গত ৮ অক্টোবর প্রথমবার নিজ গ্রাম ভাদনগরে যান মোদি। দলিত সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ, নির্বাচন সামনে আসায় তাদের কথা সবার মনে পড়েছে। এ ছাড়া কেউ তাদের কথা ভাবে না।
বাসিন্দারা বলছেন, রোহিত ভাস এলাকায় কমপক্ষে ৫০০ বাড়িতে শৌচাগার নেই। এসবের মধ্যে বেশির ভাগ বাড়িতে দলিত ও নিম্নবর্ণের লোকজন বাস করে।
ভাদনগরকে ঐতিহাসিক পর্যটনকেন্দ্রে উন্নত করতে মোদির সরকার ৫০০ কোটি রুপির পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এতে আধুনিক চিকিৎসাকেন্দ্র ও প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।