ঢাকা: প্রয়াত সংগীতশিল্পী বারী সিদ্দিকীর গাওয়া মোট গানের সংখ্যা ১৬০টি। এর মধ্যে ৮০টি গানের গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়জি। গান লেখা, সুর করা আর গাওয়ার মাঝে তাঁদের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। শহীদুল্লাহ ফরায়জি ভাষায়, ‘আমাদের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া ছিল। একজন আরেকজনকে বেশ ভালোভাবে বুঝতে পারতাম। আমি যেমন বুঝতে পারতাম বারী ভাই কী ধরনের লেখার জন্য অপেক্ষা করছেন আর তিনিও বুঝতেন আমি কেমন সুর ভেবে গানের কথা লিখেছি। তিনি সেভাবেই গানগুলো গেয়েছেন। তাই আমাদের বেশির ভাগ গানই শ্রোতাপ্রিয় ও জনপ্রিয় হয়েছে।’
এই গীতিকার ও সুরকার জুটির খুব জনপ্রিয় হওয়া গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ছোট্ট একটা মাটির ঘর, কেউ আসে না নিতে খবর’, ‘চন্দ্র সূর্য যত বড়, আমার দুঃখ তার সমান’, ‘আমার মন্দ স্বভাব জেনেও তুমি কেন চাইলে আমারে’, ‘এক মুঠো মাটির মালিকানা’, ‘আমি নাকি মন পোড়ানো কয়লার ব্যাপারী’। শহীদুল্লাহ ফরায়জি বললেন, ‘বারী সিদ্দিকীর প্রথম অ্যালবাম “দুঃখ রইল মনে”। এই অ্যালবামের সব কটি গান আমিই লিখেছি। এই অ্যালবামের লাখ লাখ কপি বিক্রি হয়েছিল। এখনো ইউটিউবে এই অ্যালবামের সব কটি গান খুব জনপ্রিয়।’
শহিদুল্লাহ ফরায়জি বলেন, ‘ছোট্ট একটা মাটির ঘর, কেউ আসে না নিতে খবর’ গানটিতে সুর দেওয়ার পর যখন বারী ভাই গাইলেন, তখন তিনি খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। আমাকে বললেন, ‘আমাদের দুজনের কবর পাশাপাশি হতে পারে না?’ বুঝতেই পারছেন, আমাদের বন্ধুত্ব কেমন ছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে জানাজার পর বারী সিদ্দিকীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নেত্রকোনায়। সেখানে কারলি গ্রামে ‘বাউল বাড়ি’তে সমাহিত করা হবে তাঁকে।
লাশবাহী গাড়ির সঙ্গে যাচ্ছেন শহীদুল্লাহ ফরায়জি। সেখান থেকে মুঠোফোনে বললেন, ‘আমি বলব, বারী সিদ্দিকী ভিন্ন ধারার বাংলা গানের প্রচলন করেন। তার কণ্ঠ, সুর আর গায়কিতে রয়েছে ভিন্নতা। আর তা সবাই গ্রহণ করেছেন। এই ভিন্ন ধারা গানের জন্য বারী সিদ্দিকী বাংলা গানের জগতে বেঁচে থাকবেন। আমার বিশ্বাস করি, বারী সিদ্দিকীর গানগুলোও শ্রোতাদের মুখে মুখে থাকবে। কখনো হারিয়ে যাবে না।’