মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দেশটির রাজধানী নেপিদোতে দুই দেশের মধ্যে স্মারক সই হয়।
আশা করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে নতুন করে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যাবে। বাংলাদেশের হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী স্মারক সইয়ে নেতৃত্ব দেন। মিয়ানমারের পক্ষে শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী উ চি টন সোয়ে সই করেন।
এরপর মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘ আলোচনার পর সই হলো। তারা (মিয়ানমার সরকার) রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে। এখন কাজটা শুরু করতে হবে। ১০ লাখের কাছাকাছি আসা রোহিঙ্গা ফেরাতে কতদিন লাগবে জানতে চাইল তিনি বলেন, কাজটা শুরু করাই বড় কথা। কতদিন লাগবে তা এখনই নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। কারণ রাখাইনে যেখান থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে এসেছেন তাদের বাড়িঘর সব জ্বালিয়ে দেওয়া, সেগুলো তৈরি করতে হবে।
এর বেশি তিনি আর কথা বলেননি। কেবল বলেছেন, পরশুদিন ঢাকায় ব্রিফ করা হবে।
পরশু দিন অর্থাৎ আগামী শনিবার ২৫ নভেম্বর এ বিষয়ে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিস্তারিত তুলে ধরা হবে মন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের ফেরতের ইস্যু ছাড়াও নাফ নদীর সীমানা রেখা বিনিময় বিষয়ক আরও একটি স্মারক সই হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাহমুদ আলী। এছাড়া তারা ১৯৯৮ সালের সীমান্ত নির্ধারণী চুক্তি নবায়নে স্বারক বিনিময় করেন। এর আগে সকালে প্রায় ৪৫ মিনিট বৈঠকে বসেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সমঝোতার বিস্তারিত জানা না গেলেও বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দিষ্ট সময়সীমা এবং জাতিসংঘের সম্পৃক্ততার প্রস্তাব দিয়েছে। চুক্তির আওতায় দুই দেশের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে। ওয়ার্কিং গ্রুপ মাঠ পর্যায়ে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক ছাড়াও মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা রয়েছেন।