আজ পবিত্র রবিউল আউয়ালের দ্বিতীয় দিন। হিজরি সনের তৃতীয় মাসের নাম রবিউল আউয়াল।
রবিউল আউয়াল শব্দের অর্থ বসন্তের শুরু। এ মাসকে এ নামে নামকরণ করা হয়েছে বসন্তকালের শুরু লগ্ন হওয়ার কারণে। (রেসালায়ে নুজুম : ২২৯)। অর্থাৎ যখন আরবি মাসের নাম রাখা হয়, তখনকার দিনে এ সময়ে ঋতুরাজ বসন্ত বিরাজ করছিল। সে হিসেবে এ মাসকে রবিউল আউয়াল বা বসন্তের সূচনাপর্ব হিসেবে নামকরণ করা হয়। কিন্তু কালক্রমে এই মাস ও বসন্ত ঋতুর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। এটা হয়েছে চন্দ্র মাস ঘূর্ণয়মান হওয়া কারণে। কিন্তু ঈমানদার নবীপ্রেমিকদের কাছে রবিউল আউয়াল অন্য আরেকটি বসন্তের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে। কেননা এ মাসেই সর্ব কালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীতে তাশরিফ এনেছেন, আর এ মাসেই তিনি ওফাত লাভ করেছেন। তাই রবিউল আউয়াল এলে বারবার বহুবার মনে পড়ে প্রিয় নবীর কথা। তাইতো অন্য মাসের তুলনায় এ মাসে একটু বেশিই মহানবী (সা.)-এর কথা স্মরণ করা হয়। তাঁকে নিয়ে কবিতা রচনা করা হয়। বিভিন্ন প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও বই লেখা হয়। বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।ঈদে মিলাদুন্নবী ও সিরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন মুসলিম দেশে ১২ রবিউল আউয়াল সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশেও স্বাধীনতার পর থেকে প্রতি ১২ রবিউল আউয়াল সরকারিভাবে ছুটির রেওয়াজ রয়েছে। এবার বাংলাদেশে পবিত্র ১২ রবিউল আউয়াল হবে ২ ডিসেম্বর ২০১৭।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, মহানবী (সা.)-এর আদর্শ কোনো বিশেষ দিনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তাঁর আদর্শ নিত্য দিনের জন্য। সব যুগের ও সব সময়ের জন্য। অন্য যেকোনো আদর্শ তাঁর আদর্শের সামনে গৌণ। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ’যারা আল্লাহ ও শেষ বিচার দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। ‘ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ২১)
সুতরাং প্রতিটি ক্ষণে, প্রতিটি কাজে মহানবী (সা.)-এর সুন্নাহ রয়েছে। রয়েছে তাঁর সুমহান আদর্শ। তাই সে মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার মধ্যেই নবীপ্রেমের স্বার্থকতা লুক্কায়িত।