একদিকে সমর্থন, অন্যদিকে প্রতিবাদ। আর মাঝে কিছুটা আপস এবং ভোলবদল! এবার ১ ডিসেম্বর পদ্মাবতীর মুক্তি নিয়ে নতুন সংশয় তৈরি হলো।
আবেদনপত্র অসম্পূর্ণ থাকায় ছবিটি নির্মাতাদের ফিরিয়ে দিল সেন্সর বোর্ড। আর এদিকে, পরিচালক ও নায়িকাকে ক্রমাগত হুমকির বিরুদ্ধে এবার মুখ খুললেন টলিউড সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। দীপিকাকে যেভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে তাতে বেজায় ক্ষুব্ধ বুম্বাদা। বলেছেন, দীপিকাকে যেভাবে নাক-কান কাটার হুমকি দেওয়া হয়েছে তা চলতে থাকলে ইতিহাস নিয়ে আর কোনো শিল্পী কাজ করতে চাইবেন না। সেন্সর বোর্ডই ঠিক করবে ছবিটি ঠিক না বেঠিক। অন্য কেউ এই নিয়ে কথা বলার কে? যা ঘটছে তার সম্পূর্ণ বিরোধী আমি। একইভাবে ছবির পাশে দাঁড়িয়েছেন একাধিক বলিউড তারকাও।
সালমান খান, আরশাদ ওয়ারসি থেকে জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ, অর্জুন কাপুর- সকলেই মনে করেন শিল্পীর স্বাধীনতা অবশ্যই থাকা উচিত। পাশে দাঁড়িয়েছেন টেলিভিশন কুইন একতা কাপুরও। টুইটের মাধ্যমে একতা প্রশ্ন তুলেছেন, যে সব গুন্ডারা প্রকাশ্যে দীপিকার নাক কেটে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে, এদের কি জেলে ভরা উচিত না? এরই মধ্যে শুক্রবার রাতে শোনা যায়, আবেদনপত্রে ত্রুটি থাকার অজুহাতে পদ্মাবতী ছবির প্রিন্ট প্রযোজনা সংস্থাকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে সিবিএফসি। এবার নতুন করে সেন্সরের সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে হবে নির্মাতাদের। সেই আবেদন ঠিক থাকলে তবেই মিলবে মুক্তির ছাড়পত্র।
ফলে ১ ডিসেম্বর ছবির মুক্তি নিয়ে নতুন করে সংশয় তৈরি হয়েছে। যদিও প্রযোজনা সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে এটি খুবই ছোট একটি বিষয়। তবে সূত্রের খবর মানলে ১ ডিসেম্বর নয় ছবি মুক্তি পাবে জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি। ১ ডিসেম্বর ছবির মুক্তি না আটকালে দীপিকার নাক কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল রাজপুত কর্নি সেনা। পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনসালিরও শিরশ্ছেদের হুমকি দিয়েছিল তারা। প্রথমে রাজস্থান, তার পর গুজরাট, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, কর্নাটক থেকে ধেয়ে আসা এই প্রবল চাপের মুখে কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন বনসালি। ছবি মুক্তির আগেই কর্নি সেনার কিছু সদস্যকে ছবিটি দেখাতেও নাকি রাজি ছিলেন তিনি।
এরপরও বিক্ষোভ অব্যাহত। শুক্রবারও সর্ব সমাজ সংগঠন এবং জওহর স্মৃতি সংস্থান নামে দুটি স্থানীয় গোষ্ঠীর প্রতিবাদ দেখিয়ে চিতোর দুর্গ বন্ধ করে দেয়। সেখানে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেয়। এরই মধ্যে আসে সিবিএফসি-র ছবিকে ফিরিয়ে দেওয়ার খবর। অনেকেই মনে করছেন গুজরাট নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই পদ্মাবতী এত টালবাহানা করা হচ্ছে। এর আগেও গুজরাট নির্বাচনের আগে পদ্মাবতীর মুক্তির ওপর স্থগিতাদেশ চেয়েছিল সে রাজ্যের বিজেপি। সে আবেদন নামঞ্জুর করে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সুপ্রিম কোর্টও ছবি নিয়ে সিদ্ধান্তের ভার সিবিএফসির ওপরই চাপিয়ে দেয়। সে কারণেই কি আবেদনপত্রে ত্রুটির অজুহাতে ছবি মুক্তি পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে? প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।