সিলেট প্রতিনিধি :: বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় নগরীর চৌহাট্টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বৈরী আবহাওয়ার মাধ্যে সিলেটের পরিবেশ রক্ষায় মানবন্ধন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। পরিবেশের দুশমন, কোম্পানীগঞ্জ পরিবেশ ধ্বংসের মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও জাফলং, বিছনাকান্দি, শ্রীপুর, লোভাছড়ার পাথরখেকোদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবিতে এ মানববন্ধন করে সংগঠনটি।
বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (বাপা) এর সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম ক্বীম বলেন, সিলেটের প্রাকৃতিক সম্পদ আজ ধ্বংসের শেষপ্রান্তে রয়েছে। আমাদের সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে পরিবেশকে বাচাতে হবে। পরিবেশ বাচলে বাচবে দেশ।
তিনি বলেন, জাফলং, বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ, লোভাছড়া, কানাইঘাট, যাদুকাটা নদীসহ এই অঞ্চলের প্রত্যেকটি নদী তীরবর্তী এলাকা পাহাড় ও টিলা ধ্বংস করে অবৈধ ভাড়াটে বোমা মেশিনের সাথে পাথর উত্তোলন চলছে। গত দেড় দশক থেকে এ অপরাধ চলছে।
মানববন্ধনে ক্বীম আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বোমা মেশিনের মাধ্যমে পাথর উত্তোলন বন্ধের নির্দেশনা দেওয়ার পরও চলছে পাথর উত্তোলন। ফলে প্রাকৃতিক সম্পদ আজ ধ্বংসের শেষ প্রান্তে। জাফলংয়ের যে সৌন্দর্য ছিল সেই সৌন্দর্য আজ আর নেই। এই জাফলং দেখে মানুষ বলে প্রকৃতিকে কিভাবে মানুষ ধ্বংস করেছে জাফলংই তার উপমা।
দু:খ প্রকাশ করে ক্বীম বলেন, সিলেট অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য ছিল, গর্ব ছিল সিলেটের প্রকৃতি। কিন্তু আজ প্রকৃতিকে এমনভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। এই অবস্থাতে শুধু পরিবেশবাদী সংগঠনের পক্ষ থেকে পাথর লুটেরাদের বিপক্ষে একা আমরা আর লড়াই করে পারছিনা। আমরা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সবার কাছে আহবান জানাচ্ছি। টিপাই মুখ বাঁধের বিপক্ষে এক সময় যেভাবে মানুষ আন্দোলন করেছিল সেইভাবে পরিবেশের দুশমনদের বিরুদ্ধেও রুখে দাড়াতে হবে।
চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ২৯ জনের প্রাণহানী ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাস থেকে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে পাথরকোয়ারীতে। এই মৃত্যুর দায়ভার নেয়ার মত কেই নেই। এদের জন্য শোক করার মতও কেউ নয়। মৃত্যুর পর তাদেরকে ক্ষতিপূরন পর্যন্তও দেয়া হয়নি। এই মৃত্যুগুলোকে নিচক দুর্ঘটনা নয় বরং এগুলো হত্যাকান্ড।
মানবন্ধনে সিলেটের প্রকৃতিকে রক্ষায় পরিবেশবাদী আন্দোলনসহ সকল রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনকেও এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়। এদিকে পাথরখেকোদের হাত থেকে প্রকৃতিকে রক্ষায় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আগামী বৃহস্পতিবার স্মারকলিপি প্রদান করে হবেও বলে জানিয়েছেন ক্বীম।