উত্তর কোরিয়ায় গতকাল শুক্রবার বিশেষ দূত পাঠিয়েছে চীন। এ পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে এতে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকরা।
অবশ্য চীনা দূতের এ সফরকে বড় ধরনের পদক্ষেপ অ্যাখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে পরমাণু ইস্যু নিয়ে উত্তর কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সংকট নিরসনে চীনা দূতের এ সফর খুব একটা কাজে দেবে বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকরা।
চীন সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাম্প্রতিক কংগ্রেস এবং পারস্পারিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে উত্তর কোরিয়াকে জানানোর জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের হয়ে এ সফর করছেন বিশেষ দূত সং তাও। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, পরমাণু ইস্যুতে সৃষ্ট পিয়ংইয়ং-ওয়াশিংটন অচলাবস্থা নিয়েও কথা বলবেন এ দূত। সেই সঙ্গে তাঁরা এটাও বলছেন, এ সফরের মধ্য দিয়ে বড় ধরনের কোনো অর্জনের প্রত্যাশা তাঁদের নেই।
এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব সিডনির এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ইউয়ান জিংদং বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নয়, বরং মুখরক্ষার খাতিরে নিশ্চয়তাসূচক খুব সাধারণ আর ধোঁয়াটে অঙ্গীকার প্রত্যাশা করা যেতে পারে। ’
তাঁর মতে, পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে আসার জন্য উত্তর কোরিয়াকে বাধ্য করতে নয়, বরং চরম পর্যায়ে না যেতে দেশটিকে সতর্ক করে দেওয়াটাই এ সফরের মূল উদ্দেশ্য। কারণ চীন এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।
জিংদং ধারণা করছেন, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন যদি ‘যৌক্তিক সীমারেখা মেনে আচরণের’ অঙ্গীকার করেন, তবে পেইচিংয়ের দিক থেকে কিছু সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং আরো নিষেধাজ্ঞার কবল থেকে উত্তর কোরিয়াকে রক্ষা করার আশ্বাস হয়তো সং তাও দেবেন। উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়ার ওপর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পাশাপাশি চীন নিজেও কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে উত্তর কোরিয়ার একগুঁয়েমিতে ক্ষিপ্ত পশ্চিমা গোষ্ঠী দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
উত্তর কোরিয়ার বেয়াড়াপনার কারণে মিত্র চীনও এসব নিষেধাজ্ঞা আরোপে সায় দেয় এবং নিজেরাও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। বলা দরকার, দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ চীনের সঙ্গে। এত কিছুর পরও পিয়ংইয়ংয়ের লাগাম টানা যাচ্ছে না দেখে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানায়। সূত্র : এএফপি।