নাগরিক কমিটির ব্যানারে আয়োজিত এই সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান অতিথি থাকার কথা। সভাপতিত্ব করবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ব্যানার নাগরিক কমিটির হলেও মূল পরিকল্পনায় আওয়ামী লীগের প্রচার উপকমিটি। আর সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মহানগর আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতারা প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডের নেতাদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা একাধিকবার অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন। ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোর নেতা-সাংসদদেরও জমায়েতে অংশ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, দুই কারণে জমায়েত বড় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথম কারণ হচ্ছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসার পর দেশে ফেরার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজই বড় কোনো সমাবেশে অংশ নেবেন। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, গত রোববার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করেছেন। বিএনপির ওই কর্মসূচির চেয়ে বেশি মানুষের জমায়েত দেখাতে চায় আওয়ামী লীগ।
বঙ্গবন্ধু ও ৭ মার্চের ভাষণ শুধু আওয়ামী লীগের একার নয়—এটা বোঝানোর জন্যই সরাসরি আওয়ামী লীগের ব্যানারে না করে নাগরিক কমিটির ব্যানারে সমাবেশ করা হচ্ছে বলে দলীয় সূত্র জানায়। ১৪ দলের শরিক দলের নেতা ও অনেক বামপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।
সমাবেশের জন্য মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকার’ আদলে। প্যান্ডেলে ২৫ হাজার চেয়ারের ব্যবস্থা আছে। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত আশা করছেন।
গতকাল শুক্রবার সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ নাগরিক সমাবেশ স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ হবে বলে আমরা আশা করছি। চারদিকে অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি।’ তিনি বলেন, এই নাগরিক সমাবেশ বিএনপির পাল্টাপাল্টি কোনো সমাবেশ নয়।
আওয়ামী লীগের এই নাগরিক সমাবেশকে স্বাগত জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। এ অধিকার সবার থাকা উচিত। এই সমাবেশের জন্য এখন তো কেউ ২৩ শর্ত দেবে না, রাস্তা আটকাবে না, বাসও বন্ধ করে দেবে না। এমনকি কাউকে ২০ মাইল হেঁটে বা বরযাত্রী সেজেও আসতে হবে না।’
গত ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড (এমওডব্লিউ) স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো। এরপরই বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণের স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই স্বীকৃতি উদ্যাপনের কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ। পরে বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি নাগরিক কমিটি করা হয়। এই কমিটির সদস্য হিসেবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় দলটির সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিলকে।
সমাবেশ উপলক্ষে গঠিত নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, বক্তৃতা, গান ও আবৃত্তির বাইরে কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বক্তৃতা করবেন। আর নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে ইউনেসকোর সেক্রেটারি জেনারেলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হবে। ইউনেসকোর এদেশীয় প্রতিনিধি বিট্রিস কালদুল উপস্থিত থাকবেন। গান গাইবেন বিশিষ্ট শিল্পীরা।