নীরব ঘাতক বিষণ্ণতা

Slider লাইফস্টাইল

1510717052

 

 

 

 

চিকিত্সা বিজ্ঞানে বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশন বলতে যা বোঝায় তা মন খারাপের চেয়ে বেশি কিছু। কোনো কোনো সময় এর কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। বিষণ্ণতার মূল লক্ষণ হিসেবে খিটখিটে মেজাজ, বিরক্তি বা অস্বাভাবিক আচরণ দেখা যায়। গুরুত্বর ক্ষেত্রে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। এতে মস্তিষ্কে ‘সেরোটোনিন’ জাতীয় রাসায়নিক পদার্থের গুণগত ও পরিমাণগত তারতম্য ঘটে।
পুরুষের তুলনায় নারীর বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় দ্বিগুণ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর কোনো কোনো দেশে (জাপান) শতকরা ৩ জন, আবার কোনো দেশে (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে) ১৭ জন মানুষ বিষণ্ণতায় ভুগছেন।
বাংলাদেশে শতকরা ৪.৬ শতাংশ নারী-পুরুষ বিষণ্ণতায় আক্রান্ত। শিশুরাও এতে আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে বিভিন্ন কারণে বিষণ্ণতার হার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এছাড়া যারা বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী যেমন- ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিস, শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদরোগ ইত্যাদি রোগে ভুগছেন তাদের বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
এছাড়া দারিদ্র্য, বেকারত্ব, একাকীত্ব, পারিবারিক সমস্যা, গর্ভকালীন এবং পরবর্তী সময়, বিবাহ বিচ্ছেদ, প্রবাসজীবন ইত্যাদি বিভিন্ন কারণেও বিষণ্ণতা দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষণ্ণতা নিয়ে চিকিত্সকগণের পরামর্শ নেওয়ার হার খুবই কম। কিন্তু সঠিক চিকিৎসার অভাবে কর্মবিমুখতা সৃষ্টি হচ্ছে। কমে যাচ্ছে উৎপাদনশীলতা। তাই এটি নির্ণয়ের জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বা মানসিক স্বাস্থ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিষণ্ণতার রয়েছে নানা ধরনের চিকিত্সা পদ্ধতি।
সাধারণত কিছু এন্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ এবং সাইকোথেরাপি বা বিহেভারিয়াল থেরাপির পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞগণ। বিষণ্ণতা দূর করার জন্য সর্বোপরি পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও সমাজের সহযোগিতাও একান্ত প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *