দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো জোটের (আসিয়ান) সম্মেলনের খসড়া ঘোষণায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিতাড়নের প্রসঙ্গের কোনো উল্লেখ নেই। মিয়ানমার আসিয়ানের অন্যতম সদস্য। ফিলিপাইনে জোটের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।
গত ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনকে জাতিগত নিধনের উদাহরণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। কিন্তু এ বিষয়টিকে এড়িয়ে যাচ্ছে আসিয়ান।
গতকাল সোমবার আসিয়ান সম্মেলনের ঘোষণার খসড়া দেখার সুযোগ পায় রয়টার্স। সেখানে ভিয়েতনামে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, ফিলিপাইনে ইসলামি উগ্রবাদীদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে ‘আক্রান্ত সম্প্রদায়ের’ মাঝে ত্রাণ বিতরণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
ফিলিপাইন বর্তমানে আসিয়ানের সভাপতি। দেশটি ওই খসড়া ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করেছে। এতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। এমনকি রোহিঙ্গা শব্দটিও ব্যবহার করা হয়নি। অং সান সু চি বিশ্বনেতাদের এই শব্দের ব্যবহার এড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছেন।
মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়া আসিয়ানের অন্যতম সদস্য রাষ্ট্র। দেশটি প্রথম থেকেই রোহিঙ্গা নির্যাতন ইস্যুতে সোচ্চার। কিন্তু আসিয়ানের নীতি হচ্ছে, কোনো সদস্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে জোটের অন্য রাষ্ট্র কোনো হস্তক্ষেপ না করা। ওই নীতির কারণে মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা নির্যাতন প্রসঙ্গটি সম্মেলনে উত্থাপন করেনি।
গত সেপ্টেম্বরে আসিয়ান দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি বিবৃতির প্রতি অনাস্থা জানায় মালয়েশিয়া। তারা তখন বলেছিল, ওই বিবৃতি বাস্তবতার প্রতিফলন করে না।
তবে আসিয়ান সম্মেলনের দেওয়া বক্তব্যে অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি সমালোচনা করেছেন অং সান সু চি। রোববারের ভাষণে তিনি বলেন, হস্তক্ষেপ না করার নীতি সমালোচনা মূলত সহযোগিতা না করার অজুহাত। ১৯৯৯ সালে তিনি যখন সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন গণতন্ত্রের জন্য, তখন এই অজুহাত ব্যবহার করেই তাঁকে সহযোগিতা করেনি আসিয়ান দেশগুলো।