সকালবেলা একদিন ঘুম থেকে জেগে দেখেন ঘাড় শক্ত হয়ে গেছে। নাড়াতে পারছেন না। নাড়াতে গেলে ব্যথা হচ্ছে। কোনো দিকে ফিরতে হলে পুরো শরীর সেদিকে ফেরাতে হচ্ছে। এমন কেন হয়? বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটে ঘাড়ের পেশি আকস্মিকভাবে টান খাওয়া বা স্প্রেইন হওয়ার কারণে। বিশেষ করে যে পেশিটা ঘাড়ের মেরুদণ্ডের হাড়কে কাঁধের সঙ্গে যুক্ত করে, সেই ল্যাভেটর স্ক্যাপুলি পেশিতে টান পড়ার কারণে এমনটা বেশি হয়। এই পেশিতে আঘাত বা টান পড়ার সাধারণ কারণগুলো হচ্ছে—
* ঘাড় বাঁকা করে শোয়া
* ভুল ভঙ্গিতে ঘাড় বাঁকা করে দীর্ঘ সময় ধরে টিভি দেখা বা বই পড়া বা কম্পিউটারে কাজ করা
* কোনো আকস্মিক আঘাত (যেমন-হঠাৎ ব্রেক কষার কারণে)
* দীর্ঘ সময় ধরে ঘাড় ও কাঁধের মাঝখানে ফোন ধরে কথা বলা ইত্যাদি।
অনেক সময় ঘাড়ের মেরুদণ্ডের হাড় ক্ষয়, হাড়ে সংক্রমণ বা ডিস্ক সরে যাওয়ার কারণেও এমন হতে পারে। অনেক জ্বর হওয়ার পর হঠাৎ ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া কিন্তু মেনিনজাইটিসের লক্ষণ। আবার মস্তিষ্কের বিশেষ স্থানে রক্তক্ষরণ হলে কেউ ঘাড় শক্ত হওয়ার সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে বা সঙ্গে প্রচণ্ড মাথাব্যথাও হতে পারে।
তবে বেশির ভাগ শক্ত ঘাড় বা স্টিফ নেকের কারণ পেশিজনিত এবং এক-দুই সপ্তাহের মধ্যেই সেরে যায়। হঠাৎ এ সমস্যা দেখা দিলে ঘাড়ে ঠান্ডা সেঁক দেওয়া এবং ব্যথানাশক বা পেশি শিথিলায়ক ওষুধ খাওয়া ছাড়া তেমন কিছু লাগে না। ভঙ্গি ও জীবনাচরণজনিত ভুলগুলো ঠিক করে নিন। পাতলা বালিশ ব্যবহার করে শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন। অনেকক্ষণ ঘাড় নিচু করে কাজ করবেন না। কম্পিউটারের মনিটরের উচ্চতা ঠিক করুন। শুয়ে কাত হয়ে টিভি দেখা, বই পড়ার মতো কাজ চলবে না। ঘাড়ে সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ব্যায়াম করুন। ঘাড়ে কলার ব্যবহারে তেমন কোনো উপকার পাওয়া যায় না। তবে ভ্রমণের সময় সুরক্ষা পেতে ব্যবহার করা যায়।