সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে গতকাল শনিবার সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ আদালতকেও সরকার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে গেছে।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার পদত্যাগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে জয়নুল আবেদীন বলেন, এটা জাতির জন্য খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ রকম ঘটনা জাতির ইতিহাসে কখনো ঘটেনি। দিনটিকে বিচার বিভাগের জন্য কালো দিন বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। জয়নুল আবেদীন বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আজকের দিনটি বিচারব্যবস্থার জন্য, আইনের শাসনের জন্য একটি অত্যন্ত ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ দিন। এককথায় বলতে গেলে, এই দেশে স্বাধীন হওয়ার পরে যা ঘটেনি তা ঘটে গেল।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন, ‘সকালেও জানা গিয়েছিল তিনি (এস কে সিনহা) কানাডা চলে গেছেন এবং পদত্যাগপত্রবিষয়ক কোনো চিঠি প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে আসেনি। পরবর্তীতেই জানলাম তিনি পদত্যাগ করেছেন। আমরা এখনো জানি না তিনি কীভাবে পদত্যাগ করলেন। মেইলের মাধ্যমে করলেন নাকি অন্য কোনো এজেন্সি সিঙ্গাপুর থেকে তাঁর পদত্যাগপত্র নিয়ে এসেছে।’
জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘এ অবস্থা বাংলাদেশের ইতিহাসে আমরা কখনো দেখিনি। শুধুমাত্র একটি ঘটনা দেখেছিলাম ১৯৮২ সালে, এরশাদ সরকারের সময় প্রধান বিচারপতি এজলাসে বসে জানতে পারলেন যে তাঁকে অপসারণ করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যৎ বিচার বিভাগ কী হবে তা জানি না। কিন্তু ষোড়শ সংশোধনীকে কেন্দ্র করে রায়ের পরে একজন প্রধান বিচারপতিকে অনেকগুলো অভিযোগ তাঁর মাথায় নিয়ে চলে যেতে হলো। ভবিষ্যতে এ রকম বিচারব্যবস্থায় কে আসতেসে, কে আসবে তা আমাদের আইনজীবীদের মধ্যে অনেক সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে।’
প্রধান বিচারপতির পদ এখন শূন্য বলে মনে করেন জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘স্ব–ইচ্ছায় এই পদত্যাগপত্র আসেনি বলে আমরা মনে করি। তারপরেও পদত্যাগপত্র গ্রহণ করায় প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য অবস্থায় আছে। এটা থাকতে পারে না। রাষ্ট্রপতি তাঁর বিবেক দিয়ে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিলে পরেই আমরা বুঝতে পারব আগামী দিনে আইনের শাসনের কে ভবিষ্যৎ। আইনের শাসনের ওপর এই যে ঘটনা কয়েক দিনে ঘটল, তা একটি কালো থাবা বলোই আমরা মনে করি।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি উম্মে কুলসুম বেগম উপস্থিত ছিলেন।