বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের নাগরিকদের মানবিক সহায়তা দানের অংশ হিসেবে কক্সবাজার সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে ১০৬ টি মেডিক্যাল টিম ক্যাম্পগুলোতে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের বলেন, অসহায় রোহিঙ্গাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে আমাদের মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৩২টি এবং আমাদের দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে আরো ৭২টি মেডিক্যাল টিম রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের মন্ত্রণালয় এটিকে একটি মানবিক বিষয় বিবেচনা করে সীমিত সম্পদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।
এছাড়া, নতুন করে আসা রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে ডায়রিয়া রোগ থেকে বাঁচাতে কলেরার টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সাড়ে ছয় লাখ শিশুকে এ টিকা দেওয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িসহ অন্যন্য জন্মনিরোধক সরঞ্জাম সরবারাহের পাশাপাশি তাদের পরিবারের আকার ছোট রাখতে এবং সংক্রামক যৌনরোগের প্রাদুর্ভাব রোধকল্পে বড় আকারে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে।
নাসিম বলেন, আমরা এরইমধ্যে রোহিঙ্গাদের মাঝে সংক্রামক যৌনরোগ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল টিম নিয়োজিত করেছি এবং তাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ সরঞ্জাম সরবরাহ করেছি।
তিনি বলেন, এছাড়া সরকারের রোগ পর্যবেক্ষণ সংস্থা রোগতত্ত্ব , রোগ নিরাময় ও গবেষনা কেন্দ্র (আইইডিসিআর) তাদের মাঝে হাম ও পোলিওর টিকা এবং ভিটামিন বিতরণ করেছে।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. আবদুল সালাম সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সাধারণত ডায়রিয়া, গলার ইনফেকশন, নিউমোনিয়া, চর্মরোগে এবং দূষিত পানি পান করার কারণে জ্বরের সমস্যায় ভুগেছে।
তিনি জানান, গর্ভবতী নারী ও উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য দীর্ঘ মেয়াদি রোগে ভুগছে এমন লোকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) হিসেব অনুযায়ী গত ৪ নভেম্বর পর্যন্ত আট লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা এ দেশে এসেছে।