ঢাকা: ট্রেন চলাচল করতে দরকার হয় লাইন। ওই লাইন স্পর্শ করেই চাকার সাহায্যে এঁকেবেঁকে এগিয়ে চলে ট্রেন। কিন্তু প্রচলিত এ ধারণা এবার পাল্টে যাচ্ছে। কেননা ট্রেন চলতে এখন আর চাকাকে লাইন স্পর্শ করতে হবে না। চুম্বকের সাহায্যে এটি এগিয়ে চলবে এবং চোখের পলকেই পৌঁছে যাবে গন্তব্যে।
নতুন এ ধারণাটি যিনি নিয়ে এসেছেন তিনি আর কেউ নন, এক বাংলাদেশি বিজ্ঞানী। বাংলাদেশি এ বিজ্ঞানীর নাম ড. আতাউল করিম। বিশ্বের সেরা ১০০ জন বিজ্ঞানীর একজন তিনি।
আতাউল করিম আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসি সংলগ্ন ভার্জিনিয়ার নরফোকে অবস্থিত ওল্ড ডোমিনিয়ন ইউনিভার্সিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট (গবেষণা) হিসেবে কর্মরত আছেন। তার এ সাফল্যে মুগ্ধ পুরো বিশ্ব। মার্কিন গণমাধ্যমেও বিষয়টি ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে।
জানা গেছে, ওল্ড ডোমিনিয়ন ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা বিগত ৭ বছর ধরে এ ধরনের একটি ট্রেন তৈরির গবেষণায় ফেডারেল প্রশাসনের বিপুল অর্থ ব্যয় করেন। কিন্তু তা সাফল্যের আশপাশেও যেতে পারেনি। অবশেষে ২০০৪ সালে এই গবেষণা প্রকল্পের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন ডঃ আতাউল করিম। এরপর তিনি মাত্র দেড় বছরে ট্রেনটি নির্মাণে সক্ষম হন। গবেষণাটি পরীক্ষামূলকভাবেও সফল হয়েছে। এখন শুধু বানিজ্যিক ভিত্তিতে চালু করার কাজটি বাকি।
জার্মানি, চীন ও জাপানে ১৫০ মাইলের বেশি বেগে চলমান ট্রেন আবিষ্কৃত হয়েছে আগেই। কিন্তু এসব ট্রেনে প্রতি মাইল ট্রাক বা লাইনের জন্য গড়ে খরচ ১১০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু ড. করিমের আবিষ্কৃত এ ট্রেনে খরচ হবে মাত্র ১২/১৩ মিলিয়ন ডলার। দেখতেও আকর্ষণীয় এ ট্রেনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তা স্টার্ট নেয়ার পর আর লাইনকে স্পর্শ করবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে ৩০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন ড. করিম। এরপর পদার্থ বিজ্ঞানে এম.এস, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এম.এস এবং ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পি.এইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন আলাবামা ইউনিভার্সিটি থেকে যথাক্রমে ১৯৭৮, ১৯৭৯ এবং ১৯৮১ সালে।
প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি নেয়ার পর পেশাগত জীবন শুরু করেন ড. করিম। মেধা ও যোগ্যতার মাধ্যমে তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র তথা বিশ্বের মেধাসম্পন্ন ৫০০০ গবেষক-ছাত্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অন্তত ৬০০ ফ্যাকাল্টিতে।
ড. করিমের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে ৬টি কলেজ, কমপক্ষে ২০টি গবেষণাকেন্দ্র, ৬ শত শিক্ষক এবং ৫ হাজারের উপরে গ্রাজুয়েট ও আন্ডার-গ্রাজুয়েট ছাত্র-ছাত্রী।