বিয়েবাড়িতে চলছিল খাওয়াদাওয়ার ধুম। ঠিক এমন সময়ে খবর এল, আসছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। প্রশাসনের গাড়ির আলো দেখেই পালাতে শুরু করলেন বর ও বরযাত্রীরা। থেমে গেল বিয়ের সব আয়োজন। অবশেষে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার এক কিশোরী।
কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দীন বন্ধ করেন এই বাল্যবিবাহ। স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ১৩ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে পাশের গ্রামের এক যুবকের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট দিনে হাজির হয়ে যান বর ও বরযাত্রীরা। বিয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় গতকাল রাত ১০টার দিকে মেয়ের বাড়িতে পুলিশ নিয়ে উপস্থিত হন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। প্রশাসনের লোক আসছে শুনে এবং গাড়ির আলো দেখে বর ও বরযাত্রীরা একে একে পালাতে শুরু করেন।
পরে মেয়ের বাবার সঙ্গে আলোচনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেওয়া হবে না মর্মে মুচলেকা নিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মেয়েটির বাবা বলেন, ‘প্রশাসনের কথায় রাজি হয়ে মুচলেকা দিয়েছি। মেয়েটিকে এখন আবার মাদ্রাসায় পড়াব। ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত আর বিয়ে দেব না।’ তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের সহায়তাও চান।
এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে আমরা বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি। মুচলেকা দিয়েছেন মেয়েটির বাবা। এই কারণে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পুলিশকে এ বিষয়টি নজরদারিতে রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
অন্যদিকে তাড়াশ ইউএনও এস এম ফেরদৌস ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার তালম ইউনিয়নে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া একটি মেয়ের বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে বর ও মেয়ের বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। পরে মেয়ের অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়।