ভারতে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে দুই মামাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। পাঞ্জাব রাজ্যের চণ্ডীগড়ে গত জুলাইয়ে শিশুটিকে ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ পায়। শিশুটি একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়। পরে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি সামনে আসে।
আজ বুধবার চণ্ডীগড়ের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল দুই মামাকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাগারে পাঠান।
শিশুটি গত আগস্টে সন্তান জন্ম দেয়। এই শিশুর গর্ভপাত করা নিয়ে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞার পর ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছিল।
শিশুটির বাবা নিম্নশ্রেণির সরকারি কর্মচারী, মা গৃহকর্মী। দরিদ্র পরিবারের এই শিশুটি তার মামাদের দ্বারা একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটি ভয়ে এ ঘটনা কাউকে জানায়নি। পরে পেটের তীব্র ব্যথা নিয়ে মা-বাবা তাকে চণ্ডীগড় পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসকেরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বলেন, শিশুটি ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার শরীর সন্তান ধারণের জন্য মোটেও উপযুক্ত নয়। এ কারণে শিশুটিকে বাঁচাতে চিকিৎসকদের পরামর্শে গর্ভপাত করানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন শিশুটির মা-বাবা। কিন্তু চণ্ডীগড় জেলার আদালত ওই আবেদন খারিজ করে দেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্টও ওই আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর গত আগস্টে সন্তান জন্ম দেয় শিশুটি।
ভারতীয় আইনে অন্তঃসত্ত্বার ২০ সপ্তাহ পর গর্ভপাত নিষিদ্ধ। নারী-পুরুষের আনুপাতিক বৈষম্য কমাতে এই কঠোর আইন করা হয়েছে। ভারতের সংস্কৃতিতে দীর্ঘদিনের গেড়ে বসা প্রথা অনুযায়ী, দেশটিতে ছেলেসন্তানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এ কারণে বছরের পর বছর লাখো মেয়েশিশুর ভ্রূণ হত্যার ঘটনা ঘটে। ২০ সপ্তাহ পর ভ্রূণের লিঙ্গ জানার পর এসব হত্যার ঘটনা ঘটে বলে ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় এ বিষয়ে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে বেশ কয়েকটি পিটিশন দাখিল করা হয়। এই পিটিশন দাখিল করা ব্যক্তিদের মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা কয়েকজন নারী রয়েছেন, যাঁরা ২০ সপ্তাহ পর গর্ভপাত করাতে চান। এ বিষয়টি আদালত সব সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়ে থাকেন।