অতিরিক্ত কাজের চাপে রুশ এক কিশোরী মডেলের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগের তির চীনা মডেলিং সংস্থার দিকে। ভোয়াদা জিজুবা নামের ওই মডেল সাংহাই ফ্যাশন উইকে অংশ নিয়েছিল।
গত মঙ্গলবার কাজ করার সময় হঠাৎ অসুস্থ বোধ করে ভোয়াদা। পরদিন তাকে সাংহাই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভোয়াদার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। সেদিনই রাশিয়ার দূতাবাস এবং তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। তবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই গত শুক্রবার তার মৃত্যু হয়।
চীনের আইন অনুযায়ী, ১৬ বছরের নিচে বয়স হলেও মডেলিংয়ের পেশায় যোগ দেওয়া যায়। ১৪ বছরের কিশোরী ভোয়াদা তিন মাসের চুক্তিতে সাংহাইভিত্তিক মডেলিং সংস্থা ইএসইইতে কাজ শুরু করে। দুই মাস ধরে চীনের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে চলছিল ফটোশুটের কাজ।
দ্য সানে প্রকাশিত খবরের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার মডেলিং সংস্থাগুলো ভোয়াদার বয়স অনুযায়ী তাকে তিন ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু চীনে ভোয়াদা কাজ করত অন্তত আট ঘণ্টা। মৃত্যুর কয়েক দিন আগেই সাংহাইয়ের ইয়ু শহরে একটি শুটের কাজ ছিল তার। তবে শারীরিক অসুস্থার কারণে সেই কাজ বাতিল করা হয়।
রাশিয়ার গণমাধ্যম সাইবেরিয়ান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিরিক্ত কাজের চাপে মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই মডেলের। ভোয়াদার পরিবারেরও অভিযোগ, ১৩-১৪ ঘণ্টা টানা কাজ করানো হতো তাকে দিয়ে।
চীনা গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস বলছে, রক্তে সংক্রমণের কারণে একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দেওয়ার ফলেই মৃত্যু হয়েছে ভোয়াদার।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে মডেলিং সংস্থা ইএসইই। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দ্য গ্লোবাল টাইমসকে বলেছেন, ‘দুই মাসে ভোয়াদাকে ১৬টি কাজে লাগানো হয়েছিল। তাকে প্রতিদিন কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার সময় দেওয়া হতো। বেশির ভাগ দিন সে আট ঘণ্টা কাজ করত, যা বাকিদের তুলনায় অনেকটাই কম।’
আর মাত্র দুই সপ্তাহ পরেই ছিল ভোয়াদার ১৫তম জন্মদিন। কিন্তু তার আগেই এমন ঘটনায় ভেঙে পড়েছে পরিবার। রাশিয়া পুলিশ ও মানবাধিকারকর্মীরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। সূত্র: এএফপি ও বিবিসি অনলাইন।