আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়া রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দেওয়ার নামে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অচল করে দিয়েছেন। ত্রাণ দিয়ে আবার তিনি সড়কপথে ঢাকায় ফিরবেন। এটা তো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা।
আজ রোববার রাজধানীর তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে নিরাপদ সড়ক দিবস ২০১৭ উদযাপন অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশকে আবারও অস্থিতিশীল ও অশান্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে। দেশে গণ-অভ্যুত্থান করার দুঃস্বপ্ন দেখে লাভ নেই। পরিবর্তন চাইলে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। দেশের জনগণ চাইলেই পরিবর্তন হবে। তার আগে গণ-অভ্যুত্থান করে জনপ্রিয় শেখ হাসিনাকে হটাবেন, তা দুঃস্বপ্নের নামান্তর।’
কান্নাকাটি ও প্রেস ব্রিফিং করে মানুষের মন জয় করা যাবে না, উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা সকাল-বিকাল স্বপ্ন দেখে। আবার সেই স্বপ্ন সকাল-বিকাল পরিবর্তন করে। কখনো খালেদা জিয়া কাঁদেন, কখনো ফখরুল কাঁদেন। কান্নাকাটি ও প্রেস ব্রিফিং করে মানুষের হৃদয় জয় করা যাবে না।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের জনপ্রিয়তার কারণে আওয়ামী লীগ ঈর্ষান্বিত, বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলামের এ মন্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনপ্রিয়তা দেখাতে গিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোথাও বিএনপির পাঁচ হাজার লোকের সমাবেশ হয়নি। যেখানে জনগণ নেই, সেখানে জনপ্রিয়তা আসবে কোথা থেকে? ফেনী থেকে চট্টগ্রামে খালেদা জিয়াকে রিসিভ করার জন্য কেউ ছিল না। এমন এক জনপ্রিয় নেত্রী, তাঁকে আমরা বাধা দিচ্ছি? আর আপনি জনপ্রিয়তার কথা বলেন?’
শত শত ত্রাণের গাড়ির পথ বন্ধ করেছেন খালেদা
বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদের এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অসুস্থ নেত্রী সড়কপথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গেছেন। সেখানে আপনাদের কর্মসূচি ঠিক নেই। আজ সকালেও সাড়ে তিন ঘণ্টা দেরি করে সাড়ে ১২টায় কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। এটাই অসুস্থতার লক্ষণ। এ বয়সে শরীর তো চলতে হবে। জোর করে আজ কক্সবাজার যাচ্ছেন।’ তিনি বলেন, ‘আপনি (খালেদা জিয়া) কত ত্রাণ দেবেন? অথচ শত শত ত্রাণের গাড়ির পথ আপনি বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা কোনো রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতার পরিচয়?’
কী প্রয়োজন খালেদাকে বাধা দিয়ে নিজেদের ক্ষতি করা?
সেতুমন্ত্রী কাদের আরও বলেন, ‘আমরা সরকারি দল। দেশ শান্তিতে চলছে। কী প্রয়োজন খালেদা জিয়াকে বাধা দিয়ে আমাদের নিজেদের ক্ষতি করা? এটা তো সরকার ও আমাদের রুলিং পার্টির ক্ষতি। আমরা কেন আমাদের ক্ষতি ডেকে আনব? আমরা সারা পথে তাঁর খবর নিয়েছি। চকোরিয়ায় রেস্ট হাউস দেওয়ার জন্য আমি বলেছি। পথে তাঁদের দেরি হলে খাবারের ব্যবস্থা করার জন্যও আমি বলেছি। আমরা সম্মান করতে জানি। আপনারা অধম হলে, আমরা উত্তম হব না কেন?’
মন্ত্রী এ সময় ট্রাকচালকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা দেখেশুনে গাড়ি চালাবেন। সামনে কুয়াশা পড়বে, এ সময় সতর্কভাবে গাড়ি চালাবেন। আপনাদের যখন অনেকই ঘাতক বলে, তখন আমার কষ্ট হয়। কারণ এ শ্রমিকেরাই রাস্তা সচল রেখে উন্নয়নের চাকাকে সচল রেখেছে। তাই গাড়ি যখন চালাবেন, তখন বেপরোয়া হবেন না।’ তিনি বলেন, রাস্তায় তিন চাকার গাড়ির দাপট কমলেও ইদানীং সড়কে মূর্তিমান আতঙ্ক হচ্ছে মোটরসাইকেল। হেলমেটবিহীন আরোহী, প্রতি গাড়িতে তিনজন-চারজন। গোটা পরিবার নিয়ে মোটরসাইকেলে চড়ে। একটু ধাক্কা লাগলেই সব শেষ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক প্রমুখ।