শ্রীমঙ্গলে কৃষকের মুখে হাঁসি : চিনি গুড়া ধান চাষে বাম্পার ফলন

কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি

sene-gura-dhan-pic-1এখন অগ্রহায়ন মাস, কৃষকের মুখে হাঁসি ফোঁটার এবং আমন ধান ঘরে তোলার উপযুক্ত সময়। গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে হচ্ছেও তাই। চলছে নবান্ন উৎসবও। এর মধ্যে বাড়তি আনন্দ গ্রামের কিছু বেকার যুবকদের মাঝে চিনিগুড়া ধান চাষ করে। এছাড়া অন্যান্য ধানেরও বাম্পার ফলন হওয়ায় এবং ধানের দাম ভাল থাকায় এ এলাকার কৃষকরা বেজায় খুশি।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন এলাকা ঘুড়ে দেখা গেছে অগ্রহায়নের আমন ধান কাঁটার ধুম পড়েছে সর্বত্র। কৃষকরা জানিয়েছেন, এইবার ধানের ফলনও হয়েছে বেশ ভাল। এছাড়া উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের বেশ কিছু বেকার যুবক লাভজনক চিনিগুড়া ধান চাষ করে কৃষিতে নতুন বিপ্লব ঘটিয়েছে।
স্থানীয় যুব কৃষকরা জানান, অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য অথবা বিয়ে-সাদীতে কিংবা যে কোন সামাজিক অনুষ্টানে মজাদার খাবার পোলাও ও বিরিয়ানীর চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। আর এই পোলাও ও বিরিয়ানীর জন্য চিনিগুড়া চালের বিকল্প নেই। চিনিগুড়া ধান বা চালের দামও পাওয়া যায় ভাল। তাই এখানকার যুব কৃষকদের এই ধান চাষের প্রতি তাদের আগ্রহও বেশি।
তারা জানান, অন্য ধান যেখানে প্রতি শতকে ২৫/৩০ কেজি হয় সেখানে চিনিগুড়া ধান হয় ১৫/২০ কেজি। তবে ফলন কিছুটা কম হলেও অন্য ধানের দাম যেখানে প্রতি মন ৮০০ টাকা বিক্রি হয় সেখানে চিনিগুড়া ধান বিক্রি হয় ১৫০০ টাকায়।
কথা হয় রামনগড় গ্রামে কৃষক সোলেমান মিয়ার সাথে তিনি জানান, ৩০ বিঘা জমিতে চিনিগুড়া ধান চাষ করেছেন। প্রতি বিঘাতে তার খরচ হয়েছে ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা। ফলন হয়েছে গড়ে ১৫ মন। প্রতি মন তিনি বিক্রি করবেন ১৫০০ টাকা দরে।
আমানতপুর গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া বলেন, আমি ৫০বিঘা জমিতে চিনিগুড়া ধান চাষ করেছি। আমাকে সার্বিক ভাবে সহযোগীতা করেছে শরিফ এগ্রো কোঃ।
তালতলা গ্রামের মোঃ রহিম মিয়া চিনিগুড়া ধান চাষ করেছেন ১০ বিঘা জমিতে । তিনি বলেন, ভাল ফলন হওয়ায় এলাকার বেকার যুবকরা উৎসাহিত হচ্ছে এই ধান চাষে।
একই এলাকার কৃষক মোঃ ইমন মিয়া, মোঃ মুহিত মিয়া, সবুজ মিয়া, রহিম মিয়া, শাহবান মিয়ার সাথে কথা বললে তারা জানান, ইস্পাহানী এগ্রো লিঃ এর ডিলার ও শহরের পুরান বাজারস্থ মেসার্স জহিরুল হক এন্টারপ্রাইজ এর মালিক মোঃ নাজমুল হাসান তাদেরকে বেকার না থেকে চিনিগুড়া ধান চাষ করার উৎসাহ দেন। এবং নাজমুল হাসানই তাদের কাছ থেকে বীজের জন্য বাজার মূল্যে ধান খরিদ করেন।
মেসার্স জহিরুল হক এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্তাধীকারী মো. নাজমুল হাসান বলেন, প্রথমে এলাকার কিছু বেকার যুবকদের বীজ দিয়ে এবং সরেজমিনে গিয়ে চিনিগুড়া ধান চাষের জন্য উৎসাহ দেই। এখন আনেক যুবকই এই ধান চাষ করে স্বাবলাম্বী হয়েছে। তিনি বলেন, এই ধানের বীজ বুনতে হয় আষাঢ়ের ১৫/২৫ তারিখের মধ্যে এবং ১৫/২৫ শ্রাবন চারা লাগালে অগ্রহায়ণ মাসের ১০ তারিখের মধ্যে ধান কাটা যায়। তিনি আরো বলেন, আমার কাছ থেকে যারা বীজ নিয়ে এই ধান লাগায় আমি তাদের ক্ষেতে গিয়ে সহযোগিতা করে থাকি। তিনি স্বাবলম্বী হবার জন্য বেকার যুবকদের চিনিগুড়া ধান চাষ করার আহবান জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *