টাঙ্গাইলের সখীপুরে চুরির অপবাদ সইতে না পেরে হাবিবুর রহমান (২৭) নামের এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার সকালে উপজেলার বড়চওনা গ্রামের মোটের পুকুরপাড় এলাকায় নিজ বাড়ির পাশে একটি গাছের ডালের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে ওই যুবক আত্মহত্যা করেন।
হাবিবুর রহমান ওই গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। এক সন্তানের জনক হাবিবুর নির্মাণশ্রমিক (রাজমিস্ত্রি) ছিলেন। বিকেলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে রাতে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। গতকাল শনিবার সকালে লাশ দাফন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে হাবিবুরের বড় ভাই হারুনুর রশীদ সখীপুর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
হাবিবুরের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার ওই গ্রামের আবদুল মজিদের বাড়ি থেকে একটি অগভীর নলকূপের একটি বৈদ্যুতিক মোটর চুরি হয়। চুরির দায়ে একই গ্রামের আবদুল বাক্কি ও হাবিবুরকে অভিযুক্ত করে গত বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে বড়চওনা বাজারের খাদ্য ব্যবসায়ী কামাল হোসেনের দোকান ঘরে একটি সালিসি বৈঠক বসে। সালিসের মাতব্বর হিসেবে ওই গ্রামের আমান উল্ল্যাহ ও শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ওই দুজনকে চোর সাব্যস্ত করে পিটুনি ও আট হাজার টাকা জরিমানার রায় দেন। সালিসি বৈঠকে বাক্কি চুরির কথা স্বীকার করলেও হাবিবুর অস্বীকার করেন। চুরির অপবাদ সইতে না পেরে হাবিবুর লজ্জায় বাড়ি থেকে চলে যান এবং ওই রাতেই তিনি আত্মহত্যা করেন।
হাবিবুরের বড় ভাই হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমার ভাই শ্রমিক। গতর খাটিয়ে কাজ করে খায়। অপমান সইতে না পেরেই সে আত্মহত্যা করে। এ ব্যাপারে আমরা খুব শিগগির মামলা করব।’
আবদুল মজিদ বলেন, ‘কে চুরি করেছে, তা আমি দেখিনি। সালিসে বাক্কি মিয়া মোটর চুরির কথা স্বীকার করলেও হাবিবুরের মুখ থেকে কিছু শুনিনি। আমি চুরির বিচার চেয়েছি, মাতব্বরেরা বিচার করেছেন।’
কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি সালিস বিষয়ে কিছু জানি না। তবে শুনেছি, হাবিবুর ছেলেটি ভালো ছিল। তবে এ বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।’
সালিসের মাতব্বর আমানুল্লাহ ও শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিচারে মোটর চুরি করার কথা স্বীকার করায় হাবিবুরের বাবার উপস্থিতিতেই হালকা মারধর ও জরিমানা করা হয়েছে।’
সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কাউকে অভিযুক্ত করে কেউ এখনো মামলা করতে আসেননি। তবে এ ব্যাপারে হাবিবুরের ভাই মামলা করবেন বলে তিনি শুনেছেন।