ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবিশ কুমার শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এই চক্রান্তসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির চক্রান্তের দুটি খবর সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম খবরটি ছিল তাঁকে হত্যার চক্রান্তসংক্রান্ত। সেপ্টেম্বর মাসের চতুর্থ সপ্তাহে খবরটি প্রথম প্রচার করে মিয়ানমারের একটি সংবাদমাধ্যম। ভারতের দু-একটি নিউজ চ্যানেলও খবরটি প্রচার করে। পরে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় খবরটি ‘ভিত্তিহীন’ বলে বিবৃতি দেয়।
অবশ্য ওই একই দিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার মোকাবিলায় দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হওয়ায় স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের হিংসুক কিছু মহল প্রধানমন্ত্রীকে খুন করার চক্রান্ত শুরু করেছে।
দ্বিতীয় খবরটি ছাপা হয়েছে চলতি সপ্তাহে, কলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রথম সারির এক ইংরেজি দৈনিকে। এই খবরে বলা হয়, চলতি মাসের ২১ তারিখে ঢাকায় বর্তমান ও সাবেক সেনা অফিসারদের একাংশ এক আসরে মিলিত হয়েছিল ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য। তারপর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
খবরে বলা হয়, মহাখালীর ওই বৈঠকের খবর পাওয়া মাত্রই ভারতীয় গোয়েন্দারা তা ঢাকাকে জানিয়ে দেন। খবরে ভারতীয় এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ কথাও বলা হয়, রোহিঙ্গা সমস্যা মাথাচাড়া দেওয়ার পর বাংলাদেশে আইএসআইয়ের তৎপরতা খুব বেড়ে গেছে।
আইএসআইয়ের এই উদ্যোগ, হাসিনাকে সরিয়ে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটানোর চক্রান্ত ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতা নিয়ে শুক্রবার সাপ্তাহিক বৈঠকে প্রশ্ন করা হলে রবিশ কুমার বিষয়টিকে ‘জল্পনা’ বলে উল্লেখ করেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সাম্প্রতিক ঢাকা সফরে বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। সেই সাক্ষাতের সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন বলে বাংলাদেশের কিছু সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়। ওই বিষয়ে ভারতের অভিমত কী? পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রকে সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রকাশিত খবরের সত্যতা নিয়ে মন্তব্য করেননি। রবিশ কুমার বলেন, সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে বিবৃতি দিয়েছেন। ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিবৃতি প্রচার করা হয়েছে। সুষমা স্বরাজ সে দেশের বিরোধী নেত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসনসহ অন্যদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। কীভাবে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরও উন্নতি ঘটানো যায়, সেসব নিয়েই এসব বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।