বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাসনদ, সরকারি দলিল, ড্রাইভিং লাইসেন্স, যানবাহনের ডিজিটাল নম্বরপ্লেট, সরকারি দলিল, রাজস্ব স্ট্যাম্প—কোনো কিছু বাদ থাকেনি। সবই তৈরি করে দেন তাঁরা। মাত্র ৫০০ থেকে ২০০০ টাকার বিনিময়ে নিখুঁতভাবে তৈরি হয় সনদ, নম্বরপ্লেট, স্ট্যাম্প। তবে এগুলো আসল নয়, নকল। আর এই জাল ও নকল সনদ, নম্বরপ্লেট, স্ট্যাম্প তৈরির অভিযোগে মো. জাকির হোসেন (৩২) ও মো. মাসুদ হাওলাদার (৩৪) নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত রাজধানীর ডেমরার কোনাপাড়ার শূন্য টেংরা ও মীরেরবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০–এর একটি দল। এ সময় এদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, ট্রেনিং সেন্টারের নকল-জাল সনদ, নকল ডিজিটাল ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির নকল ডিজিটাল নম্বরপ্লেট ও নকল ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্ড, নকল রাজস্ব স্ট্যাম্প এবং এগুলো তৈরির যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন র্যাব-১০–এর অধিনায়ক ডিআইজি মো. শাহাবুদ্দিন খান। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এই ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, জাকির হোসেন ২০০৩ সাল থেকে নীলক্ষেত এলাকায় একটি দোকানে সাইনবোর্ড, ব্যানার, সিল ও কম্পিউটার কম্পোজের আড়ালে জালিয়াতির এই ব্যবসা করে আসছিলেন। ২০১৬ সাল থেকে জালিয়াতি কাজে তাঁকে সহায়তা করে আসছিলেন মাসুদ।
কয়েক মাস আগে নীলক্ষেত ব্যবসায়ী সমিতির বহুতল ভবন তৈরির কারণে জাকির কোনাপাড়ায় তাঁর বাসায় বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম ব্যবহার করে বেশ সূক্ষ্মভাবে নকল ও জাল সনদ, রাজস্ব স্ট্যাম্প, ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির ডিজিটাল নম্বরপ্লেট ও ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও হলোগ্রাম স্টিকার তৈরি করে আসছিলেন। তাঁর অন্য সহযোগী রিপন, আরিফ ও রফিক এসব সনদ দেশের বিভিন্ন স্থানে চাহিদা অনুযায়ী পৌঁছে দিতেন। প্রতিটি জাল ও নকল সনদের জন্য ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা, নকল ডিজিটাল লাইসেন্স ৫০০ টাকা ও গাড়ির ডিজিটাল নম্বরপ্লেট দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা করে বিক্রি করেন তাঁরা।