ব্যস্ত রাস্তার পাশের ফুটপাতে দিনে-দুপুরে এক নারীকে ধর্ষণ করলেন এক মাতাল যুবক। পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেন অনেকেই। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করলেন না। কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখলেন এক অটোরিকশার চালক। তিনিও ওই নারীকে সাহায্য করতে এগিয়ে না গিয়ে নিজের মুঠোফোন বের করে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ভিডিও চিত্র ধারণে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তনমে গতকাল রোববার এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম গঞ্জি শিবা (২১)। ধর্ষণের সেই ভিডিও তিনি তুলে দিয়েছেন পুলিশের হাতে। এরপর গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত ধর্ষককে।
গঞ্জি শিবা ট্রাকের পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। ঘটনার সময় তিনি মাতাল ছিলেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। ভিডিও চিত্রে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে গঞ্জি শিবাকে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুই সপ্তাহের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা মধুসূদন মূর্তি বলেন, ধর্ষণের শিকার ওই নারী রেলওয়ে কলোনির কাছের ফুটপাতে একটি গাছের পাশে বসে ছিলেন। ওই সড়কটি শহরটির অন্যতম ব্যস্ত সড়ক। যখন গঞ্জি শিবা ওই নারীর ওপর চড়াও হয়েছিলেন, তখনো রাস্তায় মানুষজনের ভিড় ছিল। মধুসূদন মূর্তি বলেন, ‘দুজনের বক্তব্যই আমরাই নিয়েছি। কিন্তু দুজনের বক্তব্যই খুব অসংলগ্ন ও এতে অনেক অসংগতি আছে।’
ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, ওই নারীকে যখন ধর্ষণ করা হচ্ছিল, তখন অনেক মানুষ পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করেনি। নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা কর্মীরা প্রশ্ন তুলে বলেছেন, কেন ওই অটোরিকশার চালক নির্যাতনের শিকার নারীকে সাহায্য করার বদলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করছিলেন। তাঁদের বক্তব্য, ওই নারীকে সাহায্য করলেই বরং সঠিক কাজ করা হতো।
স্থানীয় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুরেশ হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, ধর্ষণের শিকার নারীর বয়স ৪৩ বছর। তিনি পারিবারিক ঝগড়ার কারণে দুই দিন আগে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। সুরেশ বলেন, ‘তিনি খুব দুর্বল ছিলেন। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে তিনি কিছু খাননি। ওই সময়ই শিবা তাঁর ওপর চড়াও হয়।’ সুরেশ আরও বলেন, ঘটনার সময় অনেক পথচারী প্রতিবাদের বদলে মুঠোফোনে ছবি তোলা বা ভিডিও করার প্রতিই বেশি আগ্রহী ছিলেন বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। পরে ওই অটোরিকশার চালক একটি ভিডিও চিত্র ধারণ করে জমা দিলে পুলিশ ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারে।