অনুষ্ঠানে জামায়াত সমর্থক চেয়ারম্যান, চলে গেলেন মন্ত্রী

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

index

 নীলফামারী: নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে জামায়াত-সমর্থিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলীর বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে তিনি সেখান থেকে চলে যান।

আজ শনিবার বেলা দুইটার দিকে ভবনটির সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন মন্ত্রী। তাঁর অনুষ্ঠান ত্যাগের পর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর আগে মন্ত্রী ওই ভবনের ফলক উন্মোচন করে ফিতা কেটে ভবনে প্রবেশ করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ রাশেদুল হক প্রধানের সভাপতিত্বে ওই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রী। ফিতা কেটে মন্ত্রী ভবনে প্রবেশের পর অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরই বক্তব্য দেন জামায়াত-সমর্থিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সৈয়দ আলী। বিষয়টি মন্ত্রীর নজরে এলে তিনি ইউএনওর কাছে জানতে চান, কীভাবে এখানে জামায়াত-সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান বক্তব্য দিলেন। এরপর এ নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে মন্ত্রী সভাস্থল ত্যাগ করেন। এতে সভা পণ্ড হয়ে যায়। মন্ত্রীর সভাস্থল ত্যাগের পর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের সামনে আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত নীলফামারী-৩ আসনের সাংসদ অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা  বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জামায়াত-সমর্থিত। তিনি বক্তব্য দেওয়ায় মন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনছার আলীর ভাই লিপন এবং জামায়াতের নেতা-কর্মীরা তাঁর (সাংসদ) সমর্থকদের ওপর হামলা চালান। এতে আহত একজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনছার আলী বলেন, সভায় জামায়াত-সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়ায় মন্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে সভা বর্জন করেন। হাতাহাতির ঘটনার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি বক্তব্য দেওয়ার সময় এমপির লোকজন আমাকে নিয়ে কটাক্ষ করায় আমার সমর্থকেরা এর প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।’

জলঢাকার ইউএনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি কোনো দল করি না। জামায়াতের সমর্থকও নই। আমি উপজেলা পরিষদের দেওয়া আমন্ত্রণপত্র পেয়ে অনুষ্ঠানে গিয়েছি। আমাকে বক্তব্য দিতে বলায় বক্তব্যও দিয়েছি। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে আমাকে এ রকম একটি পরিস্থিতিতে ফেলানো হয়েছে।’

এর আগে মন্ত্রী ডোমার উপজেলা শহরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ২ কোটি ২২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন করেন। ডোমার ইউএনও উম্মে ফাতেমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নীলফামারী-১ আসনের সাংসদ আফতাব উদ্দিন সরকার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *