নেপচুন এবং ইউরেনাস কিংবা শনি ও বৃহস্পতি গ্রহে বিপুল পরিমাণ হীরা থাকার ধারণা আজকের নয়। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চালিয়ে যান বিজ্ঞানীরা।
কিন্তু এর কোনো নিরেট প্রমান এখনও মেলেনি। কিন্তু এই প্রথমবারের মতো সেই ধারণা হয়তো সত্য প্রমাণিত হতে চলেছে। মহাশূন্যে নেপচুন এবং ইউরেনাসের সেই হীরকখণ্ডের অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। এগুলো ওখানকার মহাকাশে বৃষ্টি মতো ঝরতে থাকে! অর্থাৎ, সেখানে হীরার বৃষ্টি হয়?
এমনিতেও ধারণা করা হয়, কার্বোনাডো হীরা শত শত কোটি বছর আগে একটি বিশেষ গ্রহাণুর বিস্ফোরণে সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যান্য গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, শনি এবং বৃহস্পতির মতো কার্বনে পূর্ণ গ্রহে বিপুল পরিমাণ ক্রিস্টালের মতো চকমকি বস্তু রয়েছে। সেখানকার বজ্রসহ ঝড় মিথেনকে কার্বনে পরিণত করে। এগুলো বৃষ্টির মতো শক্ত অবস্থায় প্রথমে গ্রাফাইট এবং পরে হীরা হয়ে ঝরতে থাকে।
ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-ম্যাডিসনের প্রফেসর এবং নাসার জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরির বিশেষজ্ঞ ড. কেভিন বেইন্স বলেন, পরে অবশ্য বৃষ্টি হয়ে হীরাগুলো তীব্র উত্তপ্ত তরল গ্রহের সাগরে পড়ে ধীর ধীরে গলে যায়। সেখানে বড় আকরের একটি হীরকখণ্ডের ব্যাস এক সেন্টিমিটারের মতো হবে।
বিস্ময়কর তথ্যটি হলো, প্রতিবছর এক হাজার টন হীরা তৈরি হয় কেবল শনিতেই। কিন্তু সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন থেকেই যায়। এই খবরের সত্যতা সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা কীভাবে নিশ্চিত হচ্ছেন? তারা তো আর গিয়ে দেখেননি।
কিন্তু গবেষণা ও পর্যবেক্ষণে এর সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেয়েছি আমরা, জানান কেভিন।
এ সংক্রান্ত গবেষণায় যেসব বিষয় উঠে এসেছে তা আবারো পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু ওই সব গ্রহতে হীরকের বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা কোনভাবেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তবে হীরক বৃষ্টির নিয়ে শনি এবং বৃহস্পতির দিকেই তাদের নজর বেশি। কারণ, সেখানে প্রচুর কার্বন আছে। আর হীরা তো কার্বনেরই একটি রূপান্তরিত অবস্থা। এ কথা বলেন প্রফেসর রেইমন্ড জিনলজ। ইউরেনাস এবং নেপচুনে হীরা থাকার বিষয়টি যারা তুলে আনেন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বিশেষজ্ঞ ড. নাদিন নেটেলমান বলেন, তবে মহাশূন্যে হীরক থাকার বিষয় নিয়ে আরো বিস্তারিত গবেষণা দরকার।
সূত্র : বিবিসি, ইয়াহু