ধাপে ধাপে প্ররোচিত করে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়ার কথিত অনলাইন গেম ব্লু হোয়েলে (নীল তিমি) আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে তাঁকে কাউন্সেলিং করা শুরু করে। এরপর তিনি গেমটি না খেলার জন্য মনস্থির করেন। আগামী ছয় মাস ছাত্রটির অনলাইন ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করবে পুলিশ।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (উত্তর) মো. মশিউদ্দৌলা রেজা আজ বুধবার বলেন, ৫ অক্টোবর রাতে হলে থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের এক ছাত্র কৌতূহলবশত তাঁর মেসেঞ্জারে আসা লিংকে ক্লিক করেন। এরপর তাঁর মুঠোফোনে ব্লু হোয়েল গেমটি ডাউনলোড করেন। এরপর তিনি চারটি ধাপ খেলেন। তাঁর আচরণে সন্দেহ হওয়ায় একই হলের আরেক ছাত্র এই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি গতকাল মঙ্গলবার ছাত্রটিকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যান। এরপর ছাত্রটিকে কাউন্সেলিং করেন। ছাত্রটি নিজের ভুল বুঝতে পারেন।
আজ বিকেলে নগরের হালিশহরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ছাত্রটি সাংবাদিকদের বলেন, কৌতূহলবশত লিংকটিতে ক্লিক করে গেমটি ডাউনলোড করেছিলেন তিনি। এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। কেউ যাতে এটা না খেলেন, সে আহ্বান জানান তিনি। তাঁর হাতে ব্লেড দিয়ে নীল তিমি আঁকা দেখা গেছে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা মুঠোফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সন্তানদের আচরণে সন্দেহজনক কোনো কিছু দেখলে পুলিশকে অবহিত করতে হবে। অভিভাবক থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন স্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তি এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। যে ব্যক্তি আত্মহত্যার চেষ্টা করে বা উদ্যোগ গ্রহণ করেন, তিনি এক বছরের কারাদণ্ড কিংবা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
ব্লু হোয়েল অন্য গেমগুলোর মতো ইন্টারঅ্যাকটিভ নয়। এই গেমে খেলোয়াড়ের কাছে লিখিত বার্তায় গেম প্রশাসকের নির্দেশনা আসে। সেখানে একটা একটা করে কাজের নির্দেশ বা চ্যালেঞ্জ থাকে। সে কাজটা করার পর ছবি তুলে বা ভিডিও করে গেম প্রশাসককে পাঠাতে হয়। এভাবে ৫০তম ধাপ বা ৫০তম দিনে সবশেষ নির্দেশটি আসে। এ নির্দেশ হলো আত্মহত্যা করার।