যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন (টিএফএল) কয়েকটি অভিযোগে অ্যাপভিত্তিক ট্যাক্সিসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান উবারের লাইসেন্স নবায়ন না করলে গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাদের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে বেশ তৎপরতা চালালেও উবারের দুঃসময় যেন শেষই হচ্ছে না। নতুন করে অভিযোগ এসেছে, উবার লন্ডনের শত বছরের ট্যাক্সি ক্যাব ঐতিহ্য ধ্বংস করছে।
১৮ বছর ধরে লন্ডনে ট্যাক্সি চালান সিন পল দে। এ ছাড়া ‘ট্যাক্সি-অ্যাপ’ নামের একটি ট্যাক্সিসেবা প্রদানকারী অ্যাপেরও সহপ্রতিষ্ঠাতা তিনি। তিনি বলেন, লন্ডনের ঐতিহাসিক কালো ট্যাক্সি বছরের পর বছর এখানে আসা ভ্রমণকারীদের কাছে দেশটির ঐতিহ্য তুলে ধরে আসছে। উবার সে ঐতিহ্য বিলীন করে দিচ্ছে। উবার পুরো বিশ্বেই আর্থিকভাবে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হলেও লন্ডনের স্থানীয় ট্যাক্সি সংস্কৃতির জন্য ক্ষতিকর।
অন্যদিকে উবারের সেবার বিরোধিতা না করলেও প্রতিষ্ঠান হিসেবে উবার স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় বলে দাবি করছেন লন্ডনের স্থানীয় ট্যাক্সি চালকদের অনেকেই। তাঁদের অভিযোগ, উবার তাদের চালকদের ন্যায্য অর্থ দেয় না। উবার চালকদের কাছ থেকে প্রতিটি ভাড়ার যে ২৫ শতাংশ টাকা রেখে দেয়, তাতে একজন উবারচালক রাষ্ট্র নির্ধারিত আয়ের চেয়েও কম অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এ ছাড়া উবার ন্যায্য ভাড়ার চেয়েও কম ভাড়া নিয়ে গ্রাহক আকর্ষণ করে। এই প্রসঙ্গে সাধারণ চালকদের যুক্তি, কোটি কোটি ডলার আয় আর বিনিয়োগ করতে পারা উবার কম ভাড়ায় সেবা দিতেই পারে। তবে স্বতন্ত্র চালক হিসেবে একজনের পক্ষে সেটা সম্ভব নয়।
লন্ডনের রাস্তায় উবারের সেবা চালু রাখতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে পিটিশন সংগ্রহ চলছে। মূলত সেখানকার চালকদের চেয়ে যাত্রীরাই বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে লন্ডনের রাস্তায় উবারকে বৈধ রাখতে। এই সেবা চালু রাখতে পিটিশনে যাঁরা স্বাক্ষর করেছেন, তার মধ্যে প্রায় সাড়ে আট লাখই উবার গ্রাহক। এর প্রধান কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, উবারের ভাড়া তুলনামূলক কম। লাইসেন্স নবায়ন না করায় টিএফএলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উবার। আপিলের প্রক্রিয়া চলাকালে লন্ডনের রাস্তায় উবার তাদের সেবা চালিয়ে যেতে পারবে।